নরসিংদীতে পিতাকে শাবলের আঘাতে হত্যা করলো নিজ সন্তান

নরসিংদীতে ছেলের শাবলের আঘাতে বাবার মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। পারিবারিক কলহ থেকেই এই হৃদয়বিদারক হত্যাকাণ্ড ঘটে। এলাকাজুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। জানতে পড়ুন বিস্তারিত।


নরসিংদীর রায়পুরায় মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলের শাবলের আঘাতে বাবার মৃত্যু

নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নের বাহেরচর পশ্চিমপাড়ায় সোমবার (২৬ মে) গভীর রাতে একটি মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। মানসিকভাবে অসুস্থ ছেলে মনির হোসেন (৩০) শাবল দিয়ে আঘাত করে তার বাবা কবির হোসেনকে (৫০) হত্যা করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয়দের তথ্যে জানা যায়, কবির হোসেন তার মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলেকে নিয়ে একটি দোচালা ঘরে বসবাস করতেন। রাত আনুমানিক আড়াইটার দিকে ঘুমন্ত অবস্থায় হঠাৎ মনির তার বাবার উপর শাবল দিয়ে আঘাত হানে। আহত কবির দৌড়ে ঘর থেকে বেরিয়ে এলে মনির তাকে পেছন দিক থেকে আবার আঘাত করে। ঘটনাস্থলেই কবিরের মৃত্যু হয়।

প্রতিবেশী জয়নাল মিয়া জানান, মনির পরিবারে সবার বড়। প্রায় এক বছর আগে তিনি সৌদি আরব থেকে ফিরে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। ছয় মাস আগে তিনি দাদি, ফুফু ও চাচাতো বোনকে কুপিয়ে আহত করেন। ঐ ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় তিন মাস কারাগারে ছিলেন মনির। পরে বাবা কবির হোসেন জামিনে তাকে মুক্ত করেন এবং আলাদা ঘর করে তার সঙ্গে থাকতে শুরু করেন।

জয়নাল আরও বলেন, “আমার বাড়ির পাশে ঘটনাটি ঘটে। মনিরের হাতে শাবল থাকায় আমরা কেউ সামনে যেতে সাহস পাইনি। পরে এলাকার লোকজনের সহায়তায় তাকে আটক করে পুলিশে খবর দিই।

রায়পুরা থানার ওসি আদিল মাহমুদ জানান, অভিযুক্ত মনিরকে আটক করা হয়েছে। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় একটি মামলার প্রস্তুতি চলছে।


রাজধানীর ঐতিহাসিক উদ্যানে মাদকের আড্ডা, প্রতিদিন ৪০ কেজি গাঁজা বিক্রি

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মাদক কার্যক্রমের অভয়ারণ্য হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ। প্রতিদিন ৪০ কেজি গাঁজা বিক্রির ঘটনায় উদ্বেগ বাড়ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নজরদারি ও দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি। মাদকমুক্ত সমাজ গঠনে সচেতনতা ও সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন। বিস্তারিত জানুন এই রিপোর্টে।


রাজধানী ঢাকার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, যা নগরবাসীর কাছে প্রকৃতির কাছে সময় কাটানোর অন্যতম স্থান হিসেবে পরিচিত। এর আশপাশে রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ নানা গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান, আর পাশেই শাহবাগ থানা। একসময় এটি নগরবাসীর কাছে নিরাপদ মনে হলেও, পর্যাপ্ত নজরদারি ও সঠিক তদারকির অভাবে স্থানটি ধীরে ধীরে মাদকসেবী ও মাদককারবারিদের নিরাপদ আস্তানায় রূপ নেয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্যের নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর উদ্যানটির অন্ধকার দিকগুলো প্রকাশ্যে আসে। ১৩ মে রাত ১২টার দিকে মুক্তমঞ্চের পাশে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে নিহত হন শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী শাহরিয়ার, যিনি স্যার এ এফ রহমান হল ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক ছিলেন।

গবেষণায় উঠে এসেছে, উদ্যানে সক্রিয় ছিল তিনটি বড় মাদক চক্র—যাদের নেতৃত্বে ছিলেন মেহেদী, পারুলী আক্তার ও নবী। তাদের অধীনে প্রতিদিন গড়ে ৩০-৪০ কেজি গাঁজা বিক্রি হতো। চক্রগুলো এলাকা ভাগ করে নিয়েই ব্যবসা চালাত। আরও জানা গেছে, ফারুক নামে আরেক ব্যক্তি একই কার্যক্রমে যুক্ত ছিলেন। গাঁজাগুলো ছোট ছোট পুরিয়া বানিয়ে বিক্রি করা হতো এবং এই ব্যবসায় সরাসরি জড়িত ছিল প্রায় পঞ্চাশজন।

এই অপরাধচক্র শুধু গাঁজা নয়, সীমিত আকারে হেরোইন ও ইয়াবাও বিক্রি করত। অনেক তরুণ-তরুণী সন্ধ্যার পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত সেখানে মাদক সেবনে জড়াত। দিনের বেলায় উদ্যান এলাকায় বিভিন্ন খাবারের দোকান ও ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়িক স্থাপনাও গড়ে উঠেছিল, যা অপরাধীদের আড়াল দিত।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তথ্যমতে, শুধু মাদক নয়, এখানে সক্রিয় ছিল মোটরসাইকেল চোরচক্র, ছিনতাইকারী গ্যাং ও ব্ল্যাকমেইলিং চক্র। প্রেমিক যুগলদের ভয় দেখিয়ে অর্থ ও মূল্যবান জিনিস হাতিয়ে নিত তারা। এসব অপকর্মের সঙ্গে জড়িত ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরিচয়ধারী কিছু তরুণ, যারা মাঝেমধ্যে রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনের নামও ব্যবহার করত।

শাহরিয়ার হত্যাকাণ্ডের পর উদ্যানের নিরাপত্তা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়। এরপর ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ১৫ মে অভিযান চালিয়ে অবৈধ দোকান ও স্থাপনা উচ্ছেদ করে। এর মাধ্যমে উদ্যানে নতুন করে নিরাপত্তা নিশ্চিতের চেষ্টা চলছে।


২২ লাখ টাকা নিয়ে পালালো ছিনতাইকারীরা, ব্যবসায়ী গুলিবিদ্ধ

রাজধানীর মিরপুরে দিনে-দুপুরে প্রকাশ্যে গুলি চালিয়ে এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ২২ লাখ টাকা ছিনতাই করে দুর্বৃত্তরা। গুলিতে আহত হয়েছেন ব্যবসায়ী। ঘটনাটি এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। বিস্তারিত পড়ুন এখানে।


রাজধানীর মিরপুরে দিনের আলোয় এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে অস্ত্রের মুখে ২২ লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়েছে একদল দুর্বৃত্ত। গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন ‘মাহমুদ মানি এক্সচেঞ্জ’-এর স্বত্বাধিকারী মো. মাহমুদুল ইসলাম (৫৫)। তাকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ঘটনাটি ঘটে মঙ্গলবার (২৭ মে) সকাল ১০টার দিকে। ঘটনার পরপরই পুলিশ, র‍্যাব ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করেন।

মাহমুদুল ইসলাম মূলত জামালপুর জেলার মাদারগঞ্জ উপজেলার কারতা গ্রামের বাসিন্দা হলেও, বর্তমানে পরিবারসহ মিরপুরে বসবাস করছেন। আহত ব্যবসায়ী জানান, ওই সকালে নিজ বাসা থেকে মিরপুর ১০ নম্বর গোল চত্বরে অবস্থিত তার অফিসে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে ফায়ার সার্ভিস ও স্টেডিয়ামের সুইমিংপুলের মাঝামাঝি আব্দুল বাতেন সড়কে পৌঁছালে দুটি মোটরসাইকেলে আসা ৬ জন অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্ত তার পথ আটকায়।

দুর্বৃত্তরা তাকে টাকা দিতে বললে তিনি অস্বীকৃতি জানান, তখন তারা তাকে গুলি করে এবং সঙ্গে থাকা ২২ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয়। স্থানীয়রা দ্রুত এগিয়ে এসে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায় এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

মিরপুর মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ সাজ্জাদ রুম্মন জানান, এ ঘটনায় পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে অপরাধীদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে। তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে বিস্তারিত জানার চেষ্টা চলছে।


১৯ বছর পর কুয়েতে প্রবেশের সুযোগ পেল পাকিস্তানিরা

প্রায় দুই দশক পর কুয়েত সরকার পাকিস্তানের নাগরিকদের জন্য ভিসা নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে। ২০০৬ সাল থেকে বন্ধ থাকা এই সুবিধা পুনরায় চালু হওয়ায় দুই দেশের সম্পর্ক নতুন মাত্রা পেয়েছে। বিস্তারিত জানুন এই যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত সম্পর্কে।


কুয়েত সরকার দীর্ঘ ১৯ বছর পর পাকিস্তানি নাগরিকদের জন্য ভিসা নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে। এটি জানিয়েছেন ওভারসিজ পাকিস্তানিস মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মুস্তাফা মালিক। স্থানীয় সময় সোমবার (২৬ মে) দেশটির সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ এই খবর প্রকাশ করে।

নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, কুয়েতে পাকিস্তানি নাগরিকরা কর্মসংস্থান, পারিবারিক, সফর, পর্যটন এবং বাণিজ্যিক সহ বিভিন্ন ধরণের ভিসা আবেদন করতে পারবেন।

মুস্তাফা মালিক বলেন, এই সিদ্ধান্ত কুয়েতে থাকা হাজার হাজার পাকিস্তানিকে চাকরি, ব্যবসা এবং ভ্রমণের নতুন সুযোগ এনে দেবে। বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ বিশেষ করে আরব দেশগুলো পাকিস্তানের দক্ষ মানবসম্পদকে নিয়োগে আগ্রহী।

অন্যদিকে, কুয়েতের বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত ড. জাফর ইকবাল ঘোষণা দিয়েছেন যে, তারা ১২শ’ পাকিস্তানি নার্সকে কুয়েতের স্বাস্থ্য খাতে যুক্ত করার পরিকল্পনা করছেন। যদিও গত সপ্তাহে ১২৫ জন নার্স কুয়েত যাওয়ার কথা ছিল, বাসস্থান সমস্যা কারণে তাদের আগমন বিলম্বিত হয়েছে।

ড. জাফর ইকবাল নিশ্চিত করেছেন, সংশ্লিষ্ট টিম দ্রুত এই সমস্যার সমাধান করছে এবং আশাকরি নার্সরা কয়েক দিনের মধ্যে কুয়েতে পৌঁছবেন।

তিনি আরও জানান, “কুয়েত কর্তৃপক্ষ এখন থেকে পাকিস্তানি নাগরিকদের জন্য ওয়ার্ক ভিসা, পারিবারিক ও পর্যটন ভিসাসহ বিভিন্ন ভিসার আবেদন অনলাইনে গ্রহণ শুরু করেছে,” যা ভিসা প্রক্রিয়ায় একটি বড় উন্নতি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।


ইশরাকের শপথ নিয়ে অনিশ্চয়তা, সিদ্ধান্ত আদালতের উপর

ইশরাক হোসেনের শপথ গ্রহণ নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা। স্থানীয় সরকার বিভাগ জানিয়েছে, বিষয়টি আদালতের রায়ের ওপর নির্ভর করছে। আদালতের সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত তারা কোনো পদক্ষেপ নেবে না বলেও জানানো হয়েছে। বিস্তারিত জানুন এখানে।


ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র পদে ইশরাক হোসেনের শপথ গ্রহণ এখনো উচ্চ আদালতের বিচারাধীন থাকায় স্থানীয় সরকার বিভাগ এ বিষয়ে চূড়ান্ত রায়ের জন্য অপেক্ষা করছে—এ তথ্য জানিয়েছে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়।

মঙ্গলবার (২৭ মে) মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. সালাউদ্দিন স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২২ মে হাইকোর্ট একটি রিট খারিজ করার পর ইশরাক হোসেনকে শপথ পড়ানোর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল স্থানীয় সরকার বিভাগ। কিন্তু ২৫ মে ইশরাক নিজেই হাইকোর্টে নতুন আরেকটি রিট দায়ের করেন শপথ গ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য।

এরপর ২৬ মে, এক নাগরিক পূর্বের হাইকোর্ট আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল করেন। বর্তমানে বিষয়টি সর্বোচ্চ আদালতের বিচারাধীন হওয়ায় সরকার বলছে, শপথ কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়েছে এবং আপিল বিভাগের রায় না আসা পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে না।

এর আগে, ইশরাক হোসেনের পক্ষে ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন ২৬ মে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে একটি লিগ্যাল নোটিশ পাঠান, যেখানে সোমবারের (২৭ মে) মধ্যে শপথ পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।

এই প্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয় জানায়, সংবিধান ও সিটি করপোরেশন আইন অনুযায়ী, আদালতের নির্দেশের বাইরে কোনো ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া যাবে না। তাই আপিল বিভাগের রায় অনুযায়ীই পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।


জামায়াত নেতাদের বিচার নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন ডা. শফিক

ডা. শফিকুর রহমান অভিযোগ করেন, মিথ্যা সাক্ষ্য ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে জামায়াত নেতাদের ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। তিনি একে ‘জুডিশিয়াল কিলিং’ হিসেবে অভিহিত করেন। বিষয়টি নিয়ে উঠেছে নতুন করে বিতর্ক ও বিচারব্যবস্থার নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন।


জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের আমির ডা. শফিকুর রহমান মন্তব্য করেছেন যে, মিথ্যা সাক্ষ্য ও সাজানো মামলার ভিত্তিতে দীর্ঘদিন ধরে জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে বিচারিক হত্যাকাণ্ড (Judicial Killing) চালানো হয়েছে। মঙ্গলবার (২৭ মে) রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, আপিল বিভাগ জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামকে তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ থেকে খালাস দিয়েছে, যা প্রমাণ করে তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ছিল সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। অনেক বছর ধরে ন্যায়বিচারের প্রতীক্ষায় থাকার পর অবশেষে তিনি মুক্তি পেলেন।

সংবাদ সম্মেলনে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, যেসব জামায়াত নেতাদের বিরুদ্ধে দণ্ড কার্যকর করা হয়েছে, তাদের বিচার হয়েছে একটি পক্ষপাতদুষ্ট পরিবেশে। তিনি বলেন, “ক্যাঙ্গারু কোর্টে বিচার হয়েছে। সত্যিকারের বিচার হলে তারা দণ্ডপ্রাপ্ত হতেন না। যদি তারা আজ বেঁচে থাকতেন, দেশ ও জাতিকে অনেক কিছু দিতে পারতেন।”

তিনি আরও অভিযোগ করেন, বিচার চলাকালীন সময়ে ভিন্নমত দমন করতে গড়ে তোলা হয়েছিল দুটি নির্যাতন কেন্দ্র—একটিতে শারীরিক নির্যাতন এবং আরেকটিতে তথাকথিত ‘সেফ হোম’-এর আড়ালে মানসিক চাপ প্রয়োগ করে তথ্য নেওয়ার চেষ্টা চালানো হয়েছে।

জামায়াত আমির বলেন, ১৯৭১ সালের ঘটনায় যেসব পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, তাদের কারো সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়নি। তিনি উদাহরণ টানেন সুখরঞ্জন বালির ঘটনায়, যা তিনি পাতানো ট্রায়ালের প্রতীক হিসেবে উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, “স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় বিচার হলে এই ফাঁসি কার্যকর হতো না। স্কাইপ কেলেঙ্কারি সেই বিচার ব্যবস্থার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন তোলে, যা আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও আলোচনার জন্ম দেয়।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, এই ধরনের বিচারিক পদক্ষেপ শুধু ব্যক্তিগত ক্ষতির মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না—পরিবার, সমাজ ও জাতিগত বিভক্তির জন্যও তা দায়ী।


পুতিনকে লক্ষ্য করে হেলিকপ্টার হামলার চাঞ্চল্য

রাশিয়ার আকাশে আগুনের লাল আলো ও বিস্ফোরণের গর্জনে বিশ্বজুড়ে উত্তেজনা। পুতিনের হেলিকপ্টারে সম্ভাব্য হামলার খবরে দানা বাঁধছে রহস্য ও আতঙ্ক। বিস্তারিত জানুন এই নাটকীয় ঘটনার গভীরে।


সেই রাতে রাশিয়ার আকাশে যেন থমথমে নীরবতা নেমে এসেছিল। মস্কো শহর থেকে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে, যেখানে গাছের ডালে বাতাসের হালকা দোল, হঠাৎই ছিন্নভিন্ন করে দেয় এক যুদ্ধঘণ্টার গর্জন। সময়টা ছিল গভীর রাত—২৬ মে ২০২৫, স্থানীয় সময় রাত ১টা ৪০ মিনিট।

প্রথম খবর আসে Meduza নিউজ পোর্টাল থেকে—রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সরকারি হেলিকপ্টার বহরের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। একাধিক সশস্ত্র ড্রোন হানা দিয়েছে বহরের ওপর। এই হামলা যেন রাশিয়ার আকাশে নতুন এক আতঙ্ক ছড়িয়ে দিল। বিশ্লেষকরা বলছেন, এটা কি পুতিনের ক্ষমতার ঘরে আঘাত হানার সূচনা?

প্রেসিডেন্ট পুতিন নিজে ঘটনাস্থলে ছিলেন না, তবে ওই হেলিকপ্টার বহরে তার নিরাপত্তা বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তারা ছিলেন। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি অনুযায়ী, অজানা ড্রোন দল আচমকাই আক্রমণ চালায়, যার ফলে হেলিকপ্টারটি বাধ্য হয়ে জরুরি অবতরণ করে। হতাহতের নির্দিষ্ট তথ্য এখনো অজানা, তবে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিস্ফোরণ ও ধোঁয়ার কুন্ডলী আকাশে ছড়িয়ে পড়ে।

হামলার পেছনে ইউক্রেনীয় প্রতিরোধ গোষ্ঠীর হাত আছে কিনা, তা নিয়ে তদন্ত চলছে। যদিও ইউক্রেনের সামরিক সূত্র হামলার দায় অস্বীকার করেছে—এ খবর নিশ্চিত করেছে Reuters এবং The Guardian। রুশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় স্পষ্ট করেছে, “রাষ্ট্রপতির নিরাপত্তা অক্ষুণ্ন এবং আমরা সব রকম হুমকির জন্য প্রস্তুত।”

তবে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে—এই হামলার উদ্দেশ্য কী ছিল? কৌশলগত বার্তা না রাজনৈতিক ইঙ্গিত? বিশ্লেষক সংস্থা Bellingcat-এর মতে, অভ্যন্তরীণ কোন বিদ্রোহী গোষ্ঠীর জড়িত থাকার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। পুতিন প্রশাসনের কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা কতটা ভঙ্গুর—এই ঘটনাই সেই প্রশ্ন সামনে এনেছে।

মস্কোর সকাল শুরু হয়েছিল এক অদ্ভুত স্তব্ধতায়। সরকারি মিডিয়া শুধুমাত্র নিয়ন্ত্রিত বিবৃতি প্রচার করে, কিন্তু টেলিগ্রাম চ্যানেলগুলিতে হামলার ভিডিও মুহূর্তেই ভাইরাল হয়।

এক প্রত্যক্ষদর্শী কৃষক সের্গেই ইয়াকুশেভ বলেন, “রাতের আকাশে আগুনের লাল আলো দেখে মনে হচ্ছিল যুদ্ধ যেন আমাদের দোয়েল পাখির গাঁয়েও নেমে এসেছে।”

এই ঘটনার পর মস্কোতে নিরাপত্তা আরও কঠোর হয়েছে। ক্রেমলিনের চারপাশে সেনাদের টহল দ্বিগুণ করা হয়েছে। আশঙ্কা আর অস্ত্রের শব্দ যেন এখন রাশিয়ার বাতাসে মিশে আছে।

ঘটনার আসল কারণ এখনো ধোঁয়াশায় ঢাকা, কিন্তু এক জিনিস পরিষ্কার—রাশিয়ার আকাশে এখনো প্রতিধ্বনিত হচ্ছে সংঘর্ষের পদধ্বনি। জনগণের মনে প্রশ্ন—এই কি কেবল শুরু, নাকি আরও বড় কিছু আসছে সামনে?


প্রথমবারের মতো পর্যটকদের জন্য মদ্যপান বৈধ করল সৌদি সরকার

সৌদি আরব প্রথমবারের মতো বিদেশি পর্যটকদের জন্য সীমিত পরিসরে মদ্যপানের অনুমোদন দিয়েছে। রক্ষণশীল ইসলামী আইনের দেশে এই সিদ্ধান্ত সামাজিক ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নানা প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে। সংস্কারমুখী পদক্ষেপের অংশ হিসেবে এই নীতির প্রভাব ও ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা নিয়ে তৈরি হয়েছে আলোচনা। বিস্তারিত জানুন এখানেই।


দীর্ঘদিন ধরে ইসলামী বিধিবিধান কঠোরভাবে অনুসরণকারী সৌদি আরব এবার এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গির দিকে এগোচ্ছে। ২০২৬ সাল থেকে নির্দিষ্ট প্রায় ৬০০ পর্যটন এলাকায় বিদেশি অমুসলিমদের জন্য সীমিতভাবে মদ পরিবেশনের অনুমোদন দেওয়া হবে। এই স্থানগুলোতে থাকবে বিলাসবহুল পাঁচতারকা হোটেল, আন্তর্জাতিক মানের রিসোর্ট এবং ভিশন ২০৩০-এর গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন প্রকল্প—যেমন নিয়োম সিটি, রেড সি প্রকল্প এবং সিন্দালাহ দ্বীপ।

শুধুমাত্র বিদেশি অমুসলিম পর্যটকরা নির্দিষ্ট এই স্থানগুলোতে ওয়াইন, বিয়ার, সাইডার এবং সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ অ্যালকোহলযুক্ত স্পিরিট উপভোগ করতে পারবেন। এসব পানীয় বাহিরে নেওয়া, দোকানে বিক্রি কিংবা নিজ বাসায় সংরক্ষণ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকবে। মদ পরিবেশন করা হবে শুধুমাত্র লাইসেন্সপ্রাপ্ত হোটেল ও রিসোর্টে, প্রশিক্ষিত কর্মীদের তত্ত্বাবধানে। নিয়ম লঙ্ঘন করলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে শাস্তির আওতায় আনা হবে অথবা বন্ধ করে দেওয়া হবে।

মুসলিম নাগরিক ও সৌদিতে বসবাসরত মুসলমানদের জন্য মদ্যপান নিষিদ্ধই থাকবে। একইসঙ্গে মক্কা ও মদিনার মতো পবিত্র শহরগুলোতে অ্যালকোহলের প্রবেশ সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ থাকবে।

এই সিদ্ধান্ত যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের ‘ভিশন ২০৩০’-এর একটি অংশ, যার মূল উদ্দেশ্য হলো দেশের অর্থনীতিকে বৈচিত্র্যময় করা, পর্যটন বৃদ্ধি এবং বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণ। উল্লেখযোগ্যভাবে, এর আগে ২০২৪ সালে রিয়াদের কূটনৈতিক এলাকায় বিদেশি কূটনীতিকদের জন্য একটি সীমিত অ্যালকোহল বিক্রয় কেন্দ্র চালু করা হয়েছিল।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই পদক্ষেপ শুধুমাত্র পর্যটন খাত নয় বরং সৌদি আরবের সামাজিক ও নীতিগত কাঠামোতে একটি বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত বহন করে। তবে, এটি দেশজুড়ে নানা ধর্মীয় ও সামাজিক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।


Exit mobile version