প্রথমবারের মতো পর্যটকদের জন্য মদ্যপান বৈধ করল সৌদি সরকার

সৌদি আরব প্রথমবারের মতো বিদেশি পর্যটকদের জন্য সীমিত পরিসরে মদ্যপানের অনুমোদন দিয়েছে। রক্ষণশীল ইসলামী আইনের দেশে এই সিদ্ধান্ত সামাজিক ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নানা প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে। সংস্কারমুখী পদক্ষেপের অংশ হিসেবে এই নীতির প্রভাব ও ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা নিয়ে তৈরি হয়েছে আলোচনা। বিস্তারিত জানুন এখানেই।


দীর্ঘদিন ধরে ইসলামী বিধিবিধান কঠোরভাবে অনুসরণকারী সৌদি আরব এবার এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গির দিকে এগোচ্ছে। ২০২৬ সাল থেকে নির্দিষ্ট প্রায় ৬০০ পর্যটন এলাকায় বিদেশি অমুসলিমদের জন্য সীমিতভাবে মদ পরিবেশনের অনুমোদন দেওয়া হবে। এই স্থানগুলোতে থাকবে বিলাসবহুল পাঁচতারকা হোটেল, আন্তর্জাতিক মানের রিসোর্ট এবং ভিশন ২০৩০-এর গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন প্রকল্প—যেমন নিয়োম সিটি, রেড সি প্রকল্প এবং সিন্দালাহ দ্বীপ।

শুধুমাত্র বিদেশি অমুসলিম পর্যটকরা নির্দিষ্ট এই স্থানগুলোতে ওয়াইন, বিয়ার, সাইডার এবং সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ অ্যালকোহলযুক্ত স্পিরিট উপভোগ করতে পারবেন। এসব পানীয় বাহিরে নেওয়া, দোকানে বিক্রি কিংবা নিজ বাসায় সংরক্ষণ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকবে। মদ পরিবেশন করা হবে শুধুমাত্র লাইসেন্সপ্রাপ্ত হোটেল ও রিসোর্টে, প্রশিক্ষিত কর্মীদের তত্ত্বাবধানে। নিয়ম লঙ্ঘন করলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে শাস্তির আওতায় আনা হবে অথবা বন্ধ করে দেওয়া হবে।

মুসলিম নাগরিক ও সৌদিতে বসবাসরত মুসলমানদের জন্য মদ্যপান নিষিদ্ধই থাকবে। একইসঙ্গে মক্কা ও মদিনার মতো পবিত্র শহরগুলোতে অ্যালকোহলের প্রবেশ সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ থাকবে।

এই সিদ্ধান্ত যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের ‘ভিশন ২০৩০’-এর একটি অংশ, যার মূল উদ্দেশ্য হলো দেশের অর্থনীতিকে বৈচিত্র্যময় করা, পর্যটন বৃদ্ধি এবং বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণ। উল্লেখযোগ্যভাবে, এর আগে ২০২৪ সালে রিয়াদের কূটনৈতিক এলাকায় বিদেশি কূটনীতিকদের জন্য একটি সীমিত অ্যালকোহল বিক্রয় কেন্দ্র চালু করা হয়েছিল।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই পদক্ষেপ শুধুমাত্র পর্যটন খাত নয় বরং সৌদি আরবের সামাজিক ও নীতিগত কাঠামোতে একটি বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত বহন করে। তবে, এটি দেশজুড়ে নানা ধর্মীয় ও সামাজিক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version