দীর্ঘ ১৭ বছর পর বাংলাদেশে ফিরেছেন জোবাইদা রহমান, যিনি রাজনৈতিকভাবে আলোচিত একটি নাম। তাঁর প্রত্যাবর্তন ঘিরে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে শুরু হয়েছে নতুন আলোচনা ও নানা জল্পনা। প্রবাস জীবন কাটিয়ে হঠাৎ করে দেশে ফেরা অনেকের নজর কেড়েছে। রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ ও সম্ভাব্য পদক্ষেপ নিয়ে শুরু হয়েছে বিশ্লেষণ। জোবাইদার ফেরা শুধুই ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত, নাকি এর পেছনে আছে বৃহত্তর পরিকল্পনা—তা নিয়ে চলছে নানা গুঞ্জন।
১৭ বছর পর শাশুড়ি খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেশে ফিরেছেন ডা. জোবাইদা রহমান। ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর স্বামী তারেক রহমানের সঙ্গে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমানোর পর এবারই প্রথম বাংলাদেশে পা রাখলেন তিনি। এতদিন লন্ডনে স্বামী ও মেয়ে জায়মা রহমানকে নিয়ে প্রবাসজীবনে ছিলেন।
আজ মঙ্গলবার (৬ মে) কাতারের আমিরের বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে দীর্ঘ চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তার সঙ্গেই দেশে আসেন দুই পুত্রবধূ—জোবাইদা রহমান ও সৈয়দা শামিলা রহমান। বিমানটি সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ২০০৮ সালে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদের অভিযোগে জোবাইদা রহমান, তার স্বামী তারেক রহমান ও শাশুড়ি ইকবাল মান্দ বানুর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। এই মামলায় ২০২৩ সালে আদালতের এক রায়ে তাকে তিন বছরের কারাদণ্ড ও ৩৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। তবে ২০২৪ সালের আগস্টে রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর ওই সাজা স্থগিত হয়।
ফেরার পর তিনি ধানমন্ডির পৈতৃক বাসভবন ‘মাহবুব ভবনে’ উঠবেন বলে জানা গেছে। প্রয়াত বাবা রিয়ার অ্যাডমিরাল মাহবুব আলী খানের এই বাড়িতেই অসুস্থ মায়ের সঙ্গে থাকবেন তিনি।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস ও লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজ থেকে এমএসসি ডিগ্রি অর্জনকারী জোবাইদা ১৯৯৫ সালে বিসিএসে প্রথম হয়ে সরকারি চাকরিতে যোগ দেন। তবে দীর্ঘমেয়াদি ছুটি শেষে ফিরে না আসায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তার চাকরিচ্যুতি করে।
সিলেট জেলায় জন্ম নেওয়া জোবাইদা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল এম এ জি ওসমানীর ভাতিজি। তার বাবা মাহবুব আলী ছিলেন নৌবাহিনীর প্রধান এবং পরবর্তীতে এরশাদ সরকারের সময় মন্ত্রীও ছিলেন। তারেক রহমানের সঙ্গে তার বিয়ে হয় ১৯৯৪ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি।
এক নেতার প্রতি দেশবাসীর গভীর ভালোবাসা ও আত্মত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ পেয়েছে সাম্প্রতিক এক বক্তব্যে। ‘দেশে থাকলে তাকে বুক দিয়ে আগলে রাখতাম’—এই মর্মস্পর্শী উক্তিতে ফুটে উঠেছে অনুগত সমর্থকদের অকৃত্রিম আবেগ। অনেকেই মনে করেন, নেতার নিরাপত্তা ও মর্যাদা রক্ষায় তারা সর্বদা প্রস্তুত। এই ধরনের অনুভূতি রাজনৈতিক আনুগত্য ও দেশপ্রেমের এক অনন্য উদাহরণ, যা সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি করেছে।
গাজীপুরে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহর গাড়িতে হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিশ্লেষক পিনাকী ভট্টাচার্য। গতকাল রোববার (৪ এপ্রিল) রাতে ফেসবুকে এক পোস্টে তিনি এ হামলাকে জুলাই বিপ্লবের চেতনার বিরুদ্ধে আঘাত বলে উল্লেখ করেন।
পিনাকী ভট্টাচার্য লিখেছেন, “হাসনাত আব্দুল্লাহ জুলাই বিপ্লবের আদর্শ ধারণ করেন। তার উপর এই হামলা সমগ্র আন্দোলনের প্রতি হুমকি। তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমাদের সকলের দায়িত্ব।” তিনি আরও যোগ করেন, “দেশে থাকলে আমি তাকে রক্ষায় এগিয়ে আসতাম। যারা আছেন, তাদের উচিত হাসনাতকে সুরক্ষা দেওয়া।”
ঘটনার বিস্তারিত: সন্ধ্যায় গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তায় হাসনাতের গাড়িবহর ট্রাফিক জ্যামে আটকে থাকা অবস্থায় অজ্ঞাতপরিচয় দুর্বৃত্তরা মোটরসাইকেলে করে ঢিল ও লাঠি দিয়ে হামলা চালায়। এতে গাড়ির কাচ ভেঙে যায় এবং হাসনাতের হাতে আঘাত লাগে। পরে তিনি নিরাপদ স্থানে সরে যান এবং চিকিৎসা নেন।
এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীরা ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিক্ষোভ ও মশাল মিছিল করে। তারা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার ও জুলাই মাসের সহিংসতার দায়ীদের দ্রুত বিচারের দাবি জানায়।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে অভ্যর্থনা জানাতে নেতাকর্মীদের ব্যাপক উপস্থিতি নিয়ে আলোচনা সমগ্র দেশে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, তার প্রতি সমর্থনের এই জোয়ার দলের ঐক্য ও জনপ্রিয়তা প্রতিফলিত করে। সমাবেশস্থলে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, আনন্দমিছিল ও আবেগঘন মুহূর্তের মাধ্যমে কর্মীরা তাদের নেত্রীর প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে। এই ঘটনা আগামী রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে প্রভাবিত করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া চার মাস পর আজ (৬ মে) লন্ডন থেকে দেশে ফিরছেন। সকাল ১০টায় কাতারের আমিরের বিশেষ ফ্লাইটে তিনি শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবেন। তার আগমন উপলক্ষে বিএনপি নেতাকর্মীরা বিমানবন্দর থেকে গুলশান বাসভবন পর্যন্ত রাস্তায় ব্যাপক সমাবেশ করেছে। দলীয় পতাকা ও স্লোগান নিয়ে তারা রাস্তার দুপাশে অবস্থান নিয়েছেন। বিমানবন্দর এলাকায় ট্রাফিক পুলিশের কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে।
খালেদা জিয়ার স্বাগত প্রস্তুতি হিসেবে বিএনপির বিভিন্ন শাখাকে আলাদা এলাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ঢাকা মহানগর উত্তর, ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দলসহ অন্যান্য সংগঠন নির্ধারিত স্থানে অবস্থান করছে। গত জানুয়ারিতে কাতারের আমিরের পাঠানো এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তিনি লন্ডনে যান এবং একইভাবে আজ ফিরছেন।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নেতাকর্মীদের অবৈধ কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তিনি সতর্ক করে বলেন, জনগণের ধৈর্য শেষ হয়ে আসছে এবং তারা প্রতিবাদে রাস্তায় নামতে পারে। এই বক্তব্য রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। বিস্তারিত জানুন ফখরুলের এই সতর্কবার্তা ও জনমতের প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলের কর্মীদের উদ্দেশ্যে সতর্কবার্তা জারি করেছেন। তিনি বলেছেন, দলের কর্মীদের যেকোনও অপকর্ম থেকে বিরত থাকতে হবে, অন্যথায় আওয়ামী লীগের মতো বিএনপিকেও জনরোষের শিকার হতে হবে। তিনি জেলা পর্যায়ের নেতাদের নির্দেশ দেন, যদি কোনও কর্মী বেআইনি কার্যকলাপে লিপ্ত হয়, তবে তাদের কঠোরভাবে দমন করতে হবে অথবা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে তুলে দিতে হবে।
মঙ্গলবার বিকেলে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চিলারং ইউনিয়নের মোলানী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এক জনসভায় বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি এই মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, “আপনারা দেখেছেন ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে সাধারণ মানুষ শেখ হাসিনাকে পালানোর সময়টুকুও দেয়নি। সাধারণ মানুষের জীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছে এই ফ্যাসিবাদী সরকার। খারাপ কাজ করেছে বলেই সাধারণ মানুষ তাদের দেশ থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে।”
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, “গত ১৫ বছর ধরে দেশের মানুষ ভোট দিতে পারেনি, এবার সেই সুযোগ এসেছে। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে জনগণের কল্যাণে কাজ করবে।” তিনি একটি শান্তিপূর্ণ ও সম্প্রীতির দেশ গড়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
ড. আলী রীয়াজ জানিয়েছেন, কমিশনের মূল লক্ষ্য জাতীয় সনদ প্রণয়ন করা। এটি দেশের সামাজিক-রাজনৈতিক ঐক্য ও স্থিতিশীলতা তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। জাতীয় সনদ প্রস্তুতের প্রক্রিয়ায় কমিশনের ভূমিকা নিয়ে বিশ্লেষণ করেছেন তিনি। এই উদ্যোগের মাধ্যমে দেশে দীর্ঘমেয়াদী সমঝোতা ও গণতান্ত্রিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা সম্ভব হবে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন একটি জাতীয় সনদ তৈরির লক্ষ্যে কাজ করছে, যা সকলের মতামতের ভিত্তিতে প্রণীত হবে এবং ভবিষ্যতের বাংলাদেশের জন্য একটি দিকনির্দেশনা তৈরি করবে বলে জানিয়েছেন সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ।
বৃহস্পতিবার সংসদ ভবনে আ-আম জনতা পার্টির সঙ্গে বৈঠকের শুরুতে তিনি উল্লেখ করেন, ৫৩ বছরের রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় গণতন্ত্রের দুর্বলতার কারণে স্বৈরাচারী ও ফ্যাসিবাদী শাসনের উত্থান ঘটেছে।
অধ্যাপক আলী রীয়াজ আরও বলেন, জনগণের অভীষ্ট হলো একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা, যা ভবিষ্যতে ফ্যাসিবাদের পুনরাবৃত্তি রোধ করবে এবং গণতন্ত্রের জন্য আর কোনো জীবনহানি ঘটাবে না।
উল্লেখ্য, এর পূর্বে গত ১৭ এপ্রিল ডেসটিনি গ্রুপের প্রাক্তন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল আমীনের নেতৃত্বে বাংলাদেশ আ-আম জনতা পার্টি নামক একটি নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ ঘটে।
এটিএম আজহারের মুক্তি প্রক্রিয়ায় দেরি হওয়ায় জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্ব বিস্মিত ও ব্যথিত হয়েছে। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, আইনি জটিলতা ও প্রশাসনিক জটিলতার কারণে তার মুক্তি পিছিয়ে যাচ্ছে। জামায়াত নেতারা এই বিলম্বকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে উল্লেখ করেছেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন উত্তাপ তৈরি হয়েছে। আজহারের মুক্তি কখন নিশ্চিত হবে, তা নিয়ে এখনও অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে। এই নিয়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। বিস্তারিত জানুন আমাদের প্রতিবেদনে।
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের মুক্তি বিলম্বিত হওয়ায় বিস্ময় ও কষ্ট প্রকাশ করেছে দলটি। মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) হাইকোর্টে জামিন শুনানির পর সাংবাদিকদের কাছে এ প্রতিক্রিয়া জানান জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার।
তিনি বলেন, “৫ আগস্টের পর যারা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে আটক ছিলেন, তারা সবাই ইতোমধ্যে মুক্তি পেয়েছেন। অথচ এটিএম আজহার এখনো কারাবন্দি। তাঁর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের সাথে তার কোনও সংযোগ নেই। আইনজীবীরা আদালতে তা যথাসাধ্য প্রমাণও করেছেন।”
গোলাম পরওয়ার জানান, আট মাস পেরিয়ে গেছে, কিন্তু এখনো সুবিচার মিলছে না। তিনি বলেন, “ন্যায়বিচারের আশায় থাকা দেশের প্রতিটি মানুষ এই পরিস্থিতিতে কষ্ট পাচ্ছে। তবে আমরা এখনো আশাহত হইনি। আইনের প্রতি আমাদের পূর্ণ শ্রদ্ধা রয়েছে, এবং আমরা ন্যায়বিচারের জন্য অপেক্ষা করে যাব।”
তিনি আরও বলেন, “একই পরিস্থিতিতে অন্যরা মুক্তি পেলেও আজহারুল ইসলাম আজও বন্দি—এটা কেবল সরকারের নয়, বরং প্রশাসন ও জনগণেরও দায়।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. আলী রীয়াজ এনসিপির সাথে বৈঠকে ভিন্নমতের বিষয়গুলো নিয়ে খোলামেলা আলোচনার ঘোষণা দিয়েছেন। এই বৈঠকে রাজনৈতিক মতপার্থক্য ও বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে গঠনমূলক সংলাপের প্রত্যাশা ব্যক্ত করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ধরনের আলোচনা রাজনৈতিক সংকট নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। আসন্ন বৈঠকের ফলাফল নিয়ে রাজনৈতিক মহলে রয়েছে ব্যাপক কৌতূহল।
আজ শনিবার সকালে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। জাতীয় সংসদের এলডি হলে সকাল সাড়ে দশটায় শুরু হওয়া / ফাইল ছবি
Call for Ad – Banner
Call for Ad+88 01400 84 0008
আজ শনিবার তারিখঃ ১৯/০৪/২০২৫ইং সকালে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। জাতীয় সংসদের এলডি হলে সকাল সাড়ে দশটায় শুরু হওয়া এই আলোচনা সভায় কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ তার সূচনা বক্তব্যে একটি নতুন বাংলাদেশের সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এমন একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলা এখন সময়ের দাবি, যেখানে কোনো ফ্যাসিবাদী শাসনের পুনরাবৃত্তি ঘটবে না।
এনসিপি নেতাদের উদ্দেশ্যে অধ্যাপক আলী রীয়াজ আরও বলেন, বিভিন্ন সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলোর মধ্যে এনসিপির কিছু বিষয়ে সমর্থন এবং কিছু বিষয়ে ভিন্নমত থাকতে পারে। কমিশন ইতোমধ্যে ঐকমত্যের বিষয়গুলো চিহ্নিত করতে পেরেছে এবং সেগুলো নিয়ে সামনের দিকে অগ্রসর হবে। যেসব বিষয়ে আংশিক सहमति অথবা দ্বিমত রয়েছে, সেগুলো নিয়ে আজকের বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে এবং প্রয়োজনে এই আলোচনা অব্যাহত থাকবে। অধ্যাপক রীয়াজ জোর দিয়ে বলেন, তাদের প্রধান লক্ষ্য হলো জাতির আকাঙ্ক্ষা থেকে একটি জাতীয় সনদ তৈরি করা।
বৈঠকে অধ্যাপক আলী রীয়াজ এনসিপি নেতাদের ভূমিকার প্রশংসা করে বলেন, তারা জীবন বাজি রেখে লড়াই করে ফ্যাসিবাদী শাসককে পালাতে বাধ্য করেছেন। এই বিজয়ের পাশাপাশি তারা একটি নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থার সুস্পষ্ট দাবি জানিয়েছেন, যা জনগণের মধ্যে রাষ্ট্র সংস্কারের প্রবল আকাঙ্ক্ষা সৃষ্টি করেছে। তিনি অতীতের উদাহরণ টেনে বলেন, কীভাবে বারবার গণতন্ত্রের আকাঙ্ক্ষাকে দমন করা হয়েছে এবং গণতন্ত্রের সংগ্রামের মাধ্যমে অর্জিত বিজয় বিভিন্নভাবে নস্যাৎ করা হয়েছে। একটি রাষ্ট্রকে কীভাবে একজন ব্যক্তির নিয়ন্ত্রণে নিয়ে একটি বিশেষ শাসন ব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছিল, তারও উল্লেখ করেন তিনি। বর্তমানে একটি নতুন বাংলাদেশের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে মন্তব্য করে অধ্যাপক রীয়াজ বলেন, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এমন একটি বাংলাদেশ গড়ে তোলা উচিত, যেখানে ফ্যাসিবাদী শাসনের প্রত্যাবর্তন ঘটবে না, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো স্থায়ী হবে এবং জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে। তিনি আরও বলেন, গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং সকল প্রকার নিপীড়ন মোকাবিলা করে সেই ব্যবস্থাগুলো অপসারণ করতে হবে।
সভায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, ইফতেখারুজ্জামান এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এনসিপির আট সদস্যের প্রতিনিধি দলে নেতৃত্ব দেন আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম এবং সদস্যসচিব আখতার হোসেন। দলের অন্য সদস্যরা ছিলেন জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার, জাবেদ রাসিন, মূখ্য সমন্বয়ক নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ এবং সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব নাহিদা সারোয়ার নিভা।
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রীসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে রেড নোটিশের জন্য ইন্টারপোলে আবেদন করেছে বাংলাদেশ পুলিশ। আর্থিক দুর্নীতি ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে পলাতক এই ব্যক্তিদের ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। ইন্টারপোলের ওয়েবসাইটে এখনও তালিকা প্রকাশ হয়নি, তবে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
বাংলাদেশ পুলিশের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো (এনসিবি) শেখ হাসিনাসহ মোট ১২ জনের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলে রেড নোটিশ জারির জন্য আবেদন করেছে। গত বছরের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর বিদেশে পালিয়ে যাওয়া এসব ব্যক্তির বিরুদ্ধে বাংলাদেশের আদালতে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে।
যাদের বিরুদ্ধে আবেদন করা হয়েছে
শেখ হাসিনা, সাবেক প্রধানমন্ত্রী
ওবায়দুল কাদের, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মন্ত্রী
শেখ ফজলে নূর তাপস, সাবেক মেয়র, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন
তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সাবেক প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা
নসরুল হামিদ, সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী
মোহাম্মদ আলী আরাফাত, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী
বেনজীর আহমেদ, সাবেক পুলিশ প্রধান (আইজিপি)
জুলাইয়ের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১২ জন বিশিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে ‘রেড নোটিশ’ জারির জন্য আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলের কাছে অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো (এনসিবি)। বিভিন্ন দেশে পলাতক এই ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি ধাপে ইন্টারপোলের কাছে এই অনুরোধ পাঠানো হয়েছে।
আবেদনের প্রক্রিয়া ও অভিযোগ:
যাদের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারির আবেদন করা হয়েছে, তাদের মধ্যে রয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং প্রাক্তন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, প্রাক্তন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, প্রাক্তন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, প্রাক্তন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রাক্তন মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর প্রতিরক্ষা বিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, প্রাক্তন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, প্রাক্তন তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত এবং প্রাক্তন আইজিপি বেনজীর আহমেদ। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে বেনজীরের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারির অনুরোধ করা হয়। এর আগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের প্রেক্ষিতে ঢাকার একটি আদালত বেনজীরের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারির ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন।
Call for Ad – Banner
Call for Ad+88 01400 84 0008
পুলিশ সদর দপ্তরের সূত্র অনুযায়ী, আদালত, সরকারি আইনজীবী অথবা তদন্ত সংস্থার অনুরোধের ভিত্তিতে পুলিশ সদর দপ্তরের এনসিবি শাখা ইন্টারপোলের কাছে রেড নোটিশ জারির জন্য অনুরোধ পাঠায়।
পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, শেখ হাসিনাসহ ১২ জনের মধ্যে বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে আর্থিক অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। বাকিদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার তথ্য-প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়েছে।
শেখ হাসিনা ও বেনজীর আহমেদ ছাড়া অন্য ১০ জনের বিরুদ্ধে ১০ এপ্রিল ইন্টারপোলের কাছে অনুরোধ পাঠানো হয়। এর আগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান সরকারি আইনজীবীর কার্যালয় থেকে তাদের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারির জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশ সদর দপ্তরে নথি ও চিঠি পাঠানো হয়।
গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান সরকারি আইনজীবীর কার্যালয় থেকে শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তারের জন্য ইন্টারপোলের কাছে রেড অ্যালার্ট জারির অনুরোধ জানানো হয়েছিল।
এনসিবি যে ১২ জনের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারির আবেদন করেছে, তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের আদালত থেকে বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
অন্যদিকে, বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারির অনুরোধ করা হয় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে। এর আগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের প্রেক্ষিতে ঢাকার একটি আদালত বেনজীরের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারির ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন।
ইন্টারপোলের কাছে রেড নোটিশ জারির আবেদনের পাশাপাশি, ভারতসহ যেসব দেশের সাথে বাংলাদেশের বন্দী বিনিময় চুক্তি রয়েছে, সেই চুক্তির আওতায় বিদেশে পলাতক ব্যক্তিদের ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে অন্তর্বর্তী সরকার। তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো মনে করছে, বন্দী বিনিময় চুক্তির আওতায় ফিরিয়ে আনা সহজ হবে না।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান এবং সেখানেই অবস্থান করছেন। বাংলাদেশের বন্দী বিনিময় চুক্তি অনুযায়ী, তাকে ফেরত আনার জন্য সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতের কাছে অনুরোধ জানিয়েছে।
তবে বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ থাকায় তার ক্ষেত্রে দ্রুত পদক্ষেপ দেখা যেতে পারে।
ইন্টারপোলের ভূমিকা ও বর্তমান অবস্থা
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তিনটি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে জুলাইয়ের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সময় সংঘটিত হত্যা, গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের একটি মামলা রয়েছে। এই মামলায় শেখ হাসিনার পাশাপাশি পুলিশের প্রাক্তন মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনও অভিযুক্ত। এছাড়া ২০১৩ সালে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের হত্যা ও নির্যাতনের ঘটনায় একটি এবং বিগত সাড়ে ১৫ বছরে গুম-খুনের ঘটনায় আরেকটি মামলা রয়েছে।
প্রধান সরকারি আইনজীবীসহ একাধিক সরকারি আইনজীবী সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার তদন্ত শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আগামীকাল রোববার এই মামলায় ট্রাইব্যুনালে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার দিন ধার্য রয়েছে।
বন্দী প্রত্যর্পণ চুক্তি ও চ্যালেঞ্জ
ইন্টারপোল বিদেশে পলাতক আসামিদের অবস্থান শনাক্ত করতে সহযোগিতা করে। অন্যদিকে, বিদেশে পলাতক ব্যক্তিদের সম্ভাব্য অবস্থান সম্পর্কে তথ্য পেলে সংশ্লিষ্ট দেশ ইন্টারপোলকে জানায়। যে ১২ জনের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারির অনুরোধ করা হয়েছে, সেগুলো বর্তমানে ইন্টারপোলে প্রক্রিয়ধীন রয়েছে।
পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (গণমাধ্যম ও জনসংযোগ) ইনামুল হক জানিয়েছেন, ইন্টারপোলের সদস্যভুক্ত দেশ এখন ১৯৬টি। অপরাধ ও অপরাধীর তথ্য যাচাই-বাছাই এবং আদান-প্রদানে এই ১৯৬টি দেশের সাথে বাংলাদেশ পুলিশের এনসিবির নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে। কোনো অপরাধী দেশ ছেড়ে অন্য দেশে অবস্থান করলে, তাকে আইনের আওতায় আনার জন্য সংশ্লিষ্ট দেশ রেড নোটিশ জারির অনুরোধ জানায়।
ইন্টারপোল যাদের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারি করে, তাদের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা সোয়া সাতটায় ইন্টারপোলের ওয়েবসাইটে ৬ হাজার ৫৮৩ জনের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ দেখা যায়, যার মধ্যে ৬২ জন বাংলাদেশি। তবে রেড নোটিশ জারির জন্য সম্প্রতি অনুরোধ করা ১২ জনের নাম তালিকায় নেই।
ইন্টারপোলের ওয়েবসাইটে রেড নোটিশ জারির তালিকায় পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) পরিদর্শক মামুন এমরান খান হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত দুবাইয়ে পলাতক রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খান, শীর্ষ সন্ত্রাসী ফেরদৌস জাহাঙ্গীর ওরফে কালা জাহাঙ্গীর, শীর্ষ সন্ত্রাসী জাফর আহমেদ মানিক, শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান আহমেদ, শীর্ষ সন্ত্রাসী প্রকাশ কুমার বিশ্বাস, প্রাক্তন সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক অভি প্রমুখের নাম রয়েছে। তালিকায় বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামিদের নাম ও ছবিও রয়েছে।
নতুন করে যে ১২ জনের জন্য রেড নোটিশ জারির অনুরোধ করা হয়েছে, তাদের নাম ইন্টারপোলের ওয়েবসাইটে না থাকার কারণ সম্পর্কে সরকার ও পুলিশের উচ্চপর্যায়ের পাঁচ কর্মকর্তার সাথে কথা বলেছে প্রথম আলো। তারা জানান, অনুরোধের পর রেড নোটিশ জারির প্রক্রিয়া শুরু হয়। তবে রাজনৈতিক ঘটনাগুলোতে ইন্টারপোল নোটিশ জারির ক্ষেত্রে অনেক যাচাই-বাছাই করে। বিদেশে অবস্থানরত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা শেখ হাসিনাসহ অন্যদের ঘটনাকে রাজনৈতিক ঘটনা হিসেবে উপস্থাপনের চেষ্টা করছে। এ কারণে নোটিশ জারির প্রক্রিয়া বিলম্বিত হতে পারে। তবে বেনজীর আহমেদের ঘটনাটি আর্থিক দুর্নীতি বা অপরাধ হওয়ায় তার বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ দেখা যেতে পারে।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অনুসন্ধান চলাকালে গত বছরের ৪ মে তিনি সপরিবারে দেশ ছাড়েন। তিনি ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আইজিপি ছিলেন। এর আগে তিনি ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২০ সালের এপ্রিল পর্যন্ত র্যাবের মহাপরিচালক ছিলেন।
প্রাক্তন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ ১০ জন গত ৫ আগস্টের আগে-পরে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। এর মধ্যে প্রাক্তন মেয়র তাপস ৩ আগস্ট দেশ ছাড়েন।
পুলিশের একটি সূত্র জানায়, জুলাইয়ের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর যারা বিদেশে পালিয়ে গেছেন, তাদের ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে প্রধান দুটি চ্যালেঞ্জ ও আশঙ্কা রয়েছে। চ্যালেঞ্জ হলো, পলাতকদের কেউ কেউ অন্য দেশের নাগরিক অথবা অন্য দেশে স্থায়ীভাবে থাকার অনুমতি রয়েছে। আর আশঙ্কা হলো, আওয়ামী লীগ সরকারের সুবিধাভোগীদের মধ্যে যারা বিদেশে পলাতক, তারা বড় অঙ্কের অর্থ খরচ করে বা লবিস্ট নিয়োগ করে তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করতে পারে।
এনসিবির সূত্রগুলো জানায়, রেড নোটিশ সরাসরি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নয়। তবে এই নোটিশ জারি হলে অভিযুক্ত ব্যক্তি আন্তর্জাতিক ভ্রমণের সময় বিমানবন্দরে বা ইমিগ্রেশনে আটক হতে পারেন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে গ্রেপ্তার হয়ে নিজ দেশে ফিরতে বাধ্য হওয়ার মতো পরিস্থিতির মুখোমুখিও হতে পারেন।
পরবর্তী পদক্ষেপ
পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (গণমাধ্যম ও জনসংযোগ) ইনামুল হক প্রথম আলোকে জানান, বিদেশে পলাতক আসামিদের অবস্থান শনাক্ত করতে ইন্টারপোল সহযোগিতা করে। অন্যদিকে, বিদেশে পলাতক ব্যক্তিদের সম্ভাব্য অবস্থান সম্পর্কে তথ্য পেলে সংশ্লিষ্ট দেশ ইন্টারপোলকে জানায়। যে ১২ জনের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারির অনুরোধ করা হয়েছে, সেগুলো বর্তমানে ইন্টারপোলে প্রক্রিয়ধীন রয়েছে।