ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে চলমান উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি বিমানবন্দর সাময়িকভাবে বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পাকিস্তানি প্রতিশোধমূলক বিমান হামলার আশঙ্কায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। এ অবস্থায় সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোতে সকল বাণিজ্যিক বিমান চলাচল স্থগিত করা হয়েছে। ভারতীয় বিমানবাহিনী সীমান্ত এলাকায় তাদের নজরদারি বাড়িয়েছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে হাজারো যাত্রীর ভ্রমণ পরিকল্পনা ব্যাহত হচ্ছে। নিরাপত্তা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত বিমানবন্দরগুলো বন্ধ থাকবে বলে জানানো হয়েছে।
কাশ্মীর ইস্যুতে ভারত-পাকিস্তান মুখোমুখি, যুদ্ধাবস্থা ঘনীভূত
কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার জেরে দুই পরমাণু শক্তিধর প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার উত্তেজনা একপ্রকার যুদ্ধের দিকে এগোচ্ছে। দুই সপ্তাহের কূটনৈতিক উত্তেজনা ও পাল্টাপাল্টি হুমকির পর অবশেষে ভারতের পক্ষ থেকে আজাদ কাশ্মীরে বড় ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে। পাকিস্তানও পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় সেনা সদর দপ্তর ও একাধিক ভারতীয় বিমান গুঁড়িয়ে দিয়েছে বলে দাবি করেছে।
ভারতের এই পদক্ষেপের পর পরই উত্তরাঞ্চলের অন্তত ২১টি বিমানবন্দর ১০ মে পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে দেশটির সরকার। এর মধ্যে রয়েছে জম্মু-কাশ্মীর, লেহ, পাঞ্জাব, রাজস্থান, হিমাচল প্রদেশ ও গুজরাটের বিমানবন্দর। এতে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বহু ফ্লাইট স্থগিত বা বাতিল হয়েছে।
ভারতের বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই বিমানবন্দরগুলোতে ফ্লাইট চলাচল বন্ধ থাকবে ১০ মে ভোর পর্যন্ত। ফ্লাইট ট্র্যাকিং সাইট ফ্লাইটরাডার২৪ অনুসারে, দিল্লির উত্তরের আকাশ কার্যত ফাঁকা, শুধুমাত্র দেহরাদুন ব্যতিক্রম।
ইন্ডিগো, এয়ার ইন্ডিয়া, স্পাইসজেট, আকাশ এয়ার সহ বেশ কয়েকটি বড় এয়ারলাইন্স একাধিক ফ্লাইট বাতিল করেছে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে, আমেরিকান ও ইউনাইটেড এয়ারলাইনস দিল্লিগামী ফ্লাইট স্থগিত করেছে এবং মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপ থেকে আসা কিছু বিমানকে বিকল্প রুটে অবতরণ করতে হয়েছে।
[আরোও পড়ুনঃসহযোগিতার প্রস্তাবও] [ইউটিউবে খবর দেখুন]
এর আগে, পেহেলগামে ২২ এপ্রিলের সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জনের প্রাণহানি ঘটে, যা ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর সবচেয়ে ভয়াবহ ঘটনা। ভারত সরাসরি পাকিস্তানকে দায়ী করে সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করে। জবাবে পাকিস্তান সিমলা চুক্তি স্থগিতসহ ভারতীয় বিমানের জন্য আকাশসীমা বন্ধ ঘোষণা করে এবং সবধরনের বাণিজ্য বন্ধ রাখে।
গত ৬ মে রাতে আজাদ কাশ্মীরে ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় পাকিস্তান দাবি করছে, অন্তত ৩১ জন নিহত হয়েছে। পরদিন সকাল থেকে দুদেশের সীমান্তে গোলাগুলির আদান-প্রদান চলতে থাকে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন, ভারতের হামলার প্রতিটি রক্তবিন্দুর জবাব দেওয়া হবে।