পাকিস্তানকে চাপে রাখতে আরব সাগরে সক্রিয় হলো ভারতীয় নৌবাহিনী

ভারত আরব সাগরে সামরিক তৎপরতা বাড়িয়েছে, যার লক্ষ্য মূলত পাকিস্তানের কাছাকাছি জলসীমা। সীমান্ত উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে ভারতের এই অভিযানকে কৌশলগত বার্তা হিসেবেই দেখছেন বিশ্লেষকরা। নৌবাহিনীর সক্রিয় উপস্থিতি এবং নজরদারি প্রযুক্তি ব্যবহার করে সমুদ্রপথে নিরাপত্তা জোরদার করা হচ্ছে। পাকিস্তানও বিষয়টি ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতিতে এই পদক্ষেপ নতুন উত্তেজনা তৈরি করতে পারে।


চলমান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে এবার আরব সাগরের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে অভিযান চালিয়েছে ভারতীয় নৌবাহিনী। শুক্রবার (৯ মে) ভোরে ‘টার্গেট নির্ভর’ এই সামরিক অভিযান শুরু হয় বলে জানায় ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

এর আগে বৃহস্পতিবার রাতেই জম্মু ও কাশ্মীরের বিভিন্ন সীমান্তবর্তী এলাকায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলার চেষ্টা করে পাকিস্তান—এমন অভিযোগ উঠেছে ভারতের পক্ষ থেকে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর দাবি, জম্মু, আরএস পুরা, আরনিয়া, সাম্বা এবং হিরানগর লক্ষ্য করে একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে পাকিস্তান। তবে ভারতের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় সেগুলো প্রতিহত করা হয়।

একই রাতে পাঠানকোটে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে এবং রাজস্থানের জয়সলমেরে ভারতীয় বাহিনী একটি পাকিস্তানি ড্রোন আটকায়। এরপর চণ্ডীগড়, মোহালি ও শ্রীনগরসহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শহরে ব্ল্যাকআউট কার্যকর করা হয়, যা জনসাধারণের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে।

ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, পাকিস্তানের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোনের লক্ষ্য ছিল জম্মু, পাঠানকোট এবং উধমপুরের সেনাঘাঁটি, তবে সময়মতো প্রতিরোধ নেওয়ার ফলে হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি।

[আরোও পড়ুনঃহুঁশিয়ারি দিলেন হাসনাত] [ইউটিউবে খবর দেখুন]

পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান সরকার ভারতের দাবিকে “মিথ্যাচার” বলে উড়িয়ে দিয়েছে। আলজাজিরাকে দেওয়া এক বিবৃতিতে পাকিস্তানের এক সামরিক কর্মকর্তা বলেন, “ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ভিত্তিহীন গুজব ছড়াচ্ছে। তারা বলছে পাকিস্তানের দুটি যুদ্ধবিমান ভেঙে পড়েছে, দুইজন পাইলট ধরা পড়েছে, লাহোর ও করাচিতে ভারতীয় হামলা হয়েছে—এসবের কোনো প্রমাণ নেই।”

উভয় দেশের গণমাধ্যমে তথ্যযুদ্ধের এই ধারা চলমান রয়েছে, যা দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলছে।


বাংলাদেশকে স্বাধীন সিদ্ধান্ত নিতে হবে: চীনা রাষ্ট্রদূতের দৃষ্টিভঙ্গি

চীনের রাষ্ট্রদূত এক বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশ যেন বাইরের কোনো দেশের হস্তক্ষেপ ছাড়াই নিজস্ব রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে। তিনি মনে করেন, দেশের স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের স্বার্থে অভ্যন্তরীণ বিষয়ে স্বাধীনতা বজায় রাখা জরুরি। তার এই মন্তব্য আঞ্চলিক কূটনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে এবং বিভিন্ন মহলে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।


বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কোনো দেশের হস্তক্ষেপ বরদাস্ত করা যাবে না—এমন মন্তব্য করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন।

বৃহস্পতিবার (৮ মে) সকালে বাংলাদেশ-চীন কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে বিআইআইএসএস আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

রাষ্ট্রদূত বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশ ও চীন পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে কাজ করে যাচ্ছে। ভবিষ্যতে এই সম্পর্ক আরও গভীর ও শক্তিশালী হবে বলে দুই দেশ অঙ্গীকারবদ্ধ।

[আরোও পড়ুনঃব্যক্তিগত সফরে দেশ ত্যাগ] [ইউটিউবে খবর দেখুন]

তিনি পাক-ভারত চলমান উত্তেজনাকর পরিস্থিতি প্রসঙ্গে বলেন, চীন গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। তিনি দুই পক্ষকে উত্তেজনা না বাড়িয়ে সংযত থাকার আহ্বান জানান।

এ সময় তিনি সন্ত্রাসবাদকে চীন স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করে বলেও জানান এবং পেহেলগাম ঘটনার একটি নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য তদন্তের দাবি জানান।


ভারতের কোন অঞ্চলে আঘাত হানতে পারে পাকিস্তান? প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মন্তব্য

পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী সম্প্রতি এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ভারতীয় ভূখণ্ডের কোন অঞ্চলে তারা সম্ভাব্য হামলা চালাতে পারে। তার এই মন্তব্য দুই দেশের মধ্যে সামরিক উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে চলমান চাপের মধ্যে এমন মন্তব্য উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে আন্তর্জাতিক মহলেও। কূটনৈতিক মহলে এই বক্তব্য ঘিরে শুরু হয়েছে নানা জল্পনা-কল্পনা ও প্রতিক্রিয়া।


পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মোহাম্মদ আসিফ সম্প্রতি জিও টিভির ‘আজ শাহজাইব খানজাদা কে সাথ’ অনুষ্ঠানে ভারত-পাকিস্তান চলমান উত্তেজনা নিয়ে সরব হন।

তিনি জানান, ভারত কিছু নির্দিষ্ট শহরকে রাডারে এনে একাধিকবার টার্গেট করার চেষ্টা করেছে, যাতে প্রয়োজনে সেখানে আক্রমণ চালানো যায়। এই সম্ভাব্য হামলা প্রতিহত করতে পাকিস্তানের কিছু শহরে নিরাপত্তা সতর্কতা হিসেবে আলো নিভিয়ে দেওয়া হয়।

ভারতকে হুঁশিয়ার করে খাজা আসিফ বলেন, “আমরা সম্পূর্ণ প্রস্তুত। ভারত যদি আগ্রাসন চালায়, তাহলে তাদের তার মূল্য চুকাতে হবে। আমরা কোনোভাবেই এই পরিস্থিতি মেনে নেব না এবং তার জবাব দেওয়া হবেই।”

[আরোও পড়ুনঃহুথি নেতৃত্বের স্পষ্ট বার্তা] [ইউটিউবে খবর দেখুন]

তিনি জানান, দুই সপ্তাহ আগে শুরু হওয়া সংকট এখনো অব্যাহত রয়েছে। “যদি ভারত কোনো যৌক্তিকতা ছাড়াই পদক্ষেপ নেয়, তাহলে পাকিস্তানও সমানভাবে প্রতিক্রিয়া জানাবে,” বলেন আসিফ।

তবে তিনি স্পষ্ট করে বলেন, পাকিস্তান বেসামরিক লোকজনকে লক্ষ্যবস্তু করবে না। তার ভাষায়, “আমরা কেবল সামরিক স্থাপনাকেই প্রতিহত আক্রমণের জন্য বেছে নেব।”


“সুরক্ষা ব্যবস্থা জোরদারে ভারতের ২১ বিমানবন্দরে যাত্রীবাহী ফ্লাইট স্থগিত”

ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে চলমান উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি বিমানবন্দর সাময়িকভাবে বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পাকিস্তানি প্রতিশোধমূলক বিমান হামলার আশঙ্কায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। এ অবস্থায় সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোতে সকল বাণিজ্যিক বিমান চলাচল স্থগিত করা হয়েছে। ভারতীয় বিমানবাহিনী সীমান্ত এলাকায় তাদের নজরদারি বাড়িয়েছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে হাজারো যাত্রীর ভ্রমণ পরিকল্পনা ব্যাহত হচ্ছে। নিরাপত্তা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত বিমানবন্দরগুলো বন্ধ থাকবে বলে জানানো হয়েছে।


কাশ্মীর ইস্যুতে ভারত-পাকিস্তান মুখোমুখি, যুদ্ধাবস্থা ঘনীভূত

কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার জেরে দুই পরমাণু শক্তিধর প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার উত্তেজনা একপ্রকার যুদ্ধের দিকে এগোচ্ছে। দুই সপ্তাহের কূটনৈতিক উত্তেজনা ও পাল্টাপাল্টি হুমকির পর অবশেষে ভারতের পক্ষ থেকে আজাদ কাশ্মীরে বড় ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে। পাকিস্তানও পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় সেনা সদর দপ্তর ও একাধিক ভারতীয় বিমান গুঁড়িয়ে দিয়েছে বলে দাবি করেছে।

ভারতের এই পদক্ষেপের পর পরই উত্তরাঞ্চলের অন্তত ২১টি বিমানবন্দর ১০ মে পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে দেশটির সরকার। এর মধ্যে রয়েছে জম্মু-কাশ্মীর, লেহ, পাঞ্জাব, রাজস্থান, হিমাচল প্রদেশ ও গুজরাটের বিমানবন্দর। এতে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বহু ফ্লাইট স্থগিত বা বাতিল হয়েছে।

ভারতের বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই বিমানবন্দরগুলোতে ফ্লাইট চলাচল বন্ধ থাকবে ১০ মে ভোর পর্যন্ত। ফ্লাইট ট্র্যাকিং সাইট ফ্লাইটরাডার২৪ অনুসারে, দিল্লির উত্তরের আকাশ কার্যত ফাঁকা, শুধুমাত্র দেহরাদুন ব্যতিক্রম।

ইন্ডিগো, এয়ার ইন্ডিয়া, স্পাইসজেট, আকাশ এয়ার সহ বেশ কয়েকটি বড় এয়ারলাইন্স একাধিক ফ্লাইট বাতিল করেছে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে, আমেরিকান ও ইউনাইটেড এয়ারলাইনস দিল্লিগামী ফ্লাইট স্থগিত করেছে এবং মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপ থেকে আসা কিছু বিমানকে বিকল্প রুটে অবতরণ করতে হয়েছে।

[আরোও পড়ুনঃসহযোগিতার প্রস্তাবও] [ইউটিউবে খবর দেখুন]

এর আগে, পেহেলগামে ২২ এপ্রিলের সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জনের প্রাণহানি ঘটে, যা ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর সবচেয়ে ভয়াবহ ঘটনা। ভারত সরাসরি পাকিস্তানকে দায়ী করে সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করে। জবাবে পাকিস্তান সিমলা চুক্তি স্থগিতসহ ভারতীয় বিমানের জন্য আকাশসীমা বন্ধ ঘোষণা করে এবং সবধরনের বাণিজ্য বন্ধ রাখে।

গত ৬ মে রাতে আজাদ কাশ্মীরে ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় পাকিস্তান দাবি করছে, অন্তত ৩১ জন নিহত হয়েছে। পরদিন সকাল থেকে দুদেশের সীমান্তে গোলাগুলির আদান-প্রদান চলতে থাকে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন, ভারতের হামলার প্রতিটি রক্তবিন্দুর জবাব দেওয়া হবে।


Exit mobile version