ইসরাইলি বিমান হামলায় নিহত এক ফিলিস্তিনি শিশুর মৃতদেহ বহনের মর্মান্তিক দৃশ্য ধরা পড়েছে খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে। রয়টার্স ফটোগ্রাফার হাতেম খালেদের তোলা ছবিতে ফুটে উঠেছে গাজা সংঘাতের নির্মম বাস্তবতা। চলমান সহিংসতায় ইতিমধ্যেই হাজারো ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যার মধ্যে অসংখ্য শিশুও রয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের তীব্র নিন্দা সত্ত্বেও ইসরাইলের হামলা অব্যাহত রয়েছে।
২০২৫ সালের ১৯ এপ্রিল, দক্ষিণ গাজা উপত্যকার খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে ইসরায়েলি হামলায় নিহত এক ফিলিস্তিনি শিশুর মরদেহ বহন করছেন এক ব্যক্তি। [হাটেম খালেদ/রয়টার্স]। (রয়টার্স) ২০২৫ সালের ১৯ এপ্রিল, দক্ষিণ গাজা উপত্যকার খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে ইসরায়েলি হামলায় নিহত এক ফিলিস্তিনি শিশুর মরদেহ বহন করছেন এক ব্যক্তি। [হাটেম খালেদ/রয়টার্স]। (রয়টার্স)
গাজায় আল জাজিরার সংবাদদাতা জানিয়েছেন, ইসরায়েলি বোমা হামলা এবং ইসরায়েলি অবরোধের কারণে ত্রাণ সরবরাহ আসতে না পারায় মানুষ “মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে” এবং তাদের সন্তানদের খাওয়াতে পারছে না।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ১৮ মাস আগে ইসরায়েলের গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে কমপক্ষে ৫১,০৬৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১১৬,৫০৫ জন আহত হয়েছেন।
Call for Ad – Banner
Call for Ad+88 01400 84 0008
গাজা সরকার পরিচালিত মিডিয়া অফিস মৃতের সংখ্যা ৬১,৭০০-এর বেশি বলে হালনাগাদ করেছে এবং বলেছে ধ্বংসস্তূপের নিচে নিখোঁজ হাজার হাজার মানুষ সম্ভবত মারা গেছেন। হামাসের নেতৃত্বাধীন ৭ অক্টোবর, ২০২৩ সালের হামলায় ইসরায়েলে কমপক্ষে ১,১৩৯ জন নিহত হয়েছিল এবং ২০০ জনেরও বেশি জিম্মি হয়েছিলেন।
Apex Investments Limited (AIL), A Syed Manzur Elahi Enterprise one of the oldest and most esteemed brokerage houses in Bangladesh, is a fully compliant and DSE-licensed brokerage firm (Membership No. 07), is looking for competent and most deserving person empowering to contribute in the capital market of Bangladesh.
Provident Fund, Gratuity Fund, Group Life & Hospitalization insurance, Mobile allowance and others as per Company Policy.
How to apply:
If you meet the criteria and are you ready to be a part of our elite team, Apply online or send your updated CV with a recent photograph to: 📧 career@ail-bd.com
গ্রাফিক ডিজাইন/সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে স্নাতক ডিগ্রি থাকতে হবে।
প্রফেশনাল ডিজাইন সফটওয়্যারে দক্ষতা (যেমন: Adobe photoshop, illustrator in design, video animation, web design, social media design & related etc. design) থাকতে হবে।
সৃজনশীল চিন্তাভাবনা এবং নিত্য নতুন ডিজাইন সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকতে হবে।
যোগাযোগ এবং সময় ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা থাকতে হবে।
দায়িত্বসমূহ:
সৃজনশীল ডিজাইন তৈরি করা (ব্রোশিওর, বিজ্ঞাপন, লিফলেট, ব্যানার, লোগো, ওয়েবসাইট ডেভেলপ, ওয়েব ও ভিডিও
এনিমেশন, সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট ইত্যাদিসহ যে কোন ডিজাইনের কাজ)।
প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন অনুযায়ী কনসেপ্ট ডেভেলপমেন্ট করা।
যেকোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় হতে ন্যূনতম স্নাতক (গ্র্যাজুয়েশন) ডিগ্রি থাকতে হবে।
কমপক্ষে ২ বছরের কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
কম্পিউটার ও অফিস অ্যাপ্লিকেশনে দক্ষতা (MS Word, Excel, PowerPoint, Email আদান-প্রদান ও ইন্টারনেট চালনায় দক্ষতা সহ আধুনিক প্রযুক্তিতে অভিজ্ঞতা) থাকতে হবে।
বাংলা ও ইংরেজিতে সাবলীলতা এবং উভয় ভাষায় অফিসিয়াল ড্রাফট প্রনয়ণ করার দক্ষতা থাকতে হবে।
সময় ব্যবস্থাপনা, সাবলীল বাচনভঙ্গী এবং যোগাযোগের ক্ষেত্রে দক্ষতা থাকতে হবে।
বেতন: আলোচনা সাপেক্ষে।
আবেদনের শেষ তারিখ: ৩০ এপ্রিল ২০২৫
আবেদন প্রক্রিয়া: আগ্রহী প্রার্থীদেরকে মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর নিম্নোক্ত ই-মেইল ঠিকানায় তাদের জীবনবৃত্তান্ত (ই-মেইল ঠিকানা ও মোবাইল নাম্বারসহ) এবং কাজের নমুনা পাঠানোর জন্য অনুরোধ করা হলো (গ্রাফিক ডিজাইনারের ক্ষেত্রে)।
বিঃদ্রঃ কেবলমাত্র বাছাইকৃত প্রার্থীদের সাক্ষাতকারের জন্য ডাকা হবে।
মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ফারুক সম্প্রচার সত্ত্ব বিক্রি না হওয়া প্রসঙ্গে “অস্থায়ী বাজার মন্দা”র কথা উল্লেখ করেছেন। তার মতে, বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি অনুকূল না হওয়ায় মিডিয়া সত্ত্ব বিক্রিতে ধীরগতি পরিলক্ষিত হচ্ছে। ফারুক এই অবস্থাকে অস্থায়ী সংকট হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেছেন, বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে অবস্থার উন্নতি হবে। বিশেষজ্ঞরা এই মন্তব্যকে বর্তমান মিডিয়া শিল্পের চ্যালেঞ্জের প্রতিফলন হিসেবে দেখছেন।
ফাইল ছবি
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) আসন্ন বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ের মধ্যকার দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের টেলিভিশন সম্প্রচার স্বত্ব বিক্রি করতে পারেনি। ফলস্বরূপ, এই দুটি দেশের মধ্যেকার ক্রিকেট লড়াই সরাসরি দেখানোর দায়িত্ব নিয়েছে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি)। সম্প্রচার স্বত্ব বিক্রি করতে না পারায় কিছুটা হতাশ হয়েছেন বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ।
আজ শনিবার বনানীতে একটি অনুষ্ঠানে ফারুক আহমেদ এই পরিস্থিতির কারণ হিসেবে দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনকে ইঙ্গিত করেন। তিনি বলেন, ‘বিষয়টি একেবারে শুরু থেকে বলতে হবে। বর্তমানে ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক ক্রীড়াঙ্গনে এক ধরনের মন্দা পরিস্থিতি বিরাজ করছে। একটু খারাপ সময় যাচ্ছে। সরকারের পরিবর্তনের পর সবকিছু স্বাভাবিক হতে কিছুটা সময় লাগছে।’
বিটিভি খেলা সম্প্রচার করলেও, এর জন্য বিসিবি কোনো আর্থিক সুবিধা পাবে না। তবে বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ খেলা দেখানোর জন্য বিটিভির কাছ থেকে সম্প্রচার সময় (স্লট) পাওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
ফারুক আহমেদ বলেন, ‘বিটিভি খেলা দেখাচ্ছে, আমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। বিটিভির সম্প্রচার সময় পাওয়া বেশ কঠিন। বোর্ডের পক্ষ থেকে সচিব মহোদয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। আপনারা জানেন, বিটিভির সম্প্রচার সময় কিনতে হয়। আমরা তার প্রতি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ যে বিটিভি বিনামূল্যে আমাদের খেলা দেখানোর সুযোগ করে দিয়েছে। এর মাধ্যমে অন্ততপক্ষে খেলাটি সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছাবে।’
বিটিভি ছাড়াও অন্য কোনো বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে খেলা সম্প্রচার করা যায় কিনা, সেই চেষ্টাও চালাচ্ছে বিসিবি। বিসিবি প্রধান আরও জানান, ‘আমরা এখনো আলোচনা করছি, অন্য কোনো টিভি চ্যানেল পাওয়া যায় কিনা। যদি এই ম্যাচ নাও দেখানো সম্ভব হয়, আমরা পরের ম্যাচের জন্য চেষ্টা করব। এছাড়াও, আগামী আড়াই বছরের জন্য মিডিয়া স্বত্ব বিক্রির প্রক্রিয়াও চলছে। আমরা এর জন্য দরপত্র (টেন্ডার) তৈরি করে ফেলেছি এবং আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলোকে অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানাব।’
পাকিস্তানের সাম্প্রতিক দাপ্তরিক বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশের প্রতি আনুষ্ঠানিক ক্ষমা প্রার্থনা বা যুদ্ধক্ষতিপূরণের কোনো উল্লেখ নেই বলে জানা গেছে। এই ঘোষণায় ১৯৭১ সালের ঘটনাবলি সম্পর্কে পাকিস্তানের অবস্থান স্পষ্ট করা হলেও ক্ষমা চাওয়া ও ক্ষতিপূরণের মতো সংবেদনশীল ইস্যুগুলো এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এটি দুই দেশের মধ্যে ঐতিহাসিক বিরোধের ক্ষেত্রে নতুন বিতর্কের সূত্রপাত করতে পারে।
প্রায় ১৫ বছর পর বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ে গত বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের পর বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে গণহত্যার জন্য পাকিস্তানের আনুষ্ঠানিক ক্ষমা চাওয়া এবং দেশটির কাছে আটকে থাকা সম্পদ ফেরত পাওয়ার বিষয়টি বিশেষভাবে প্রচার করা হয়। তবে বৈঠকের একদিন পর শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) পাকিস্তানের পক্ষ থেকে প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ক্ষমা চাওয়া ও সম্পদের মতো অমীমাংসিত বিষয়গুলোর কোনো উল্লেখ দেখা যায়নি।
বৈঠকের পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিন দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়নে অমীমাংসিত বিষয়গুলোর সমাধানের ওপর জোর দেন। তিনি জানান, বাংলাদেশ বৈঠকে ’৭১-এর গণহত্যার জন্য পাকিস্তানের কাছে ক্ষমা চেয়েছে এবং পাকিস্তান ভবিষ্যতে এ বিষয়ে আলোচনা চালিয়ে যেতে সম্মত হয়েছে। এছাড়াও বাংলাদেশ ৪ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলার ফেরত চেয়েছে এবং এ নিয়ে আরও আলোচনা হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ‘অমীমাংসিত বিষয়’ নিয়ে জোরদার প্রচার করা হলেও, পাকিস্তান সেদিন কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি। তবে বৈঠকের একদিন পর, শুক্রবার, পাকিস্তান পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক নিয়ে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করে।
ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের আলোচনায় দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে নতুন করে শুরু করার যৌথ অঙ্গীকার প্রতিফলিত হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক বিষয়, গাজায় ইসরায়েলের হামলার নিন্দা এবং জম্মু ও কাশ্মীরকে ‘ভারতের অবৈধ দখল’ হিসেবে উল্লেখ করে এর সমাধানের মতো বিষয়গুলো ঢাকা বৈঠকে আলোচিত হয়েছে বলে জানানো হয়। তবে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে ‘গণহত্যার জন্য ক্ষমা চাওয়া বা অর্থ ফেরত’ প্রসঙ্গে কোনো কথা সেই বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়নি।
যদিও পাকিস্তান তাদের বিজ্ঞপ্তিতে অতীতের ‘অমীমাংসিত বিষয়গুলোর’ তুলনায় ভবিষ্যতের সম্ভাবনার দিকেই বেশি মনোযোগ দিয়েছে বলে মনে হচ্ছে। ইসলামাবাদের বিবৃতিতে ঢাকা ও ইসলামাবাদের সাংস্কৃতিক সম্পর্ক, অভিন্ন ইতিহাস এবং জনগণের পারস্পরিক আকাঙ্ক্ষার কথা উঠে এসেছে। পাকিস্তান তাদের বিজ্ঞপ্তিতে বিশেষভাবে উল্লেখ করেছে, ‘বৈঠকে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, শিক্ষাগত ও কৌশলগত সহযোগিতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।’
শুক্রবার প্রকাশিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে পাকিস্তান সাম্প্রতিক সময়ে অনুষ্ঠিত কয়েকটি উচ্চ পর্যায়ের যোগাযোগের কথাও উল্লেখ করেছে। পাশাপাশি, সম্পর্কের গতিশীলতা বজায় রাখতে নিয়মিত প্রাতিষ্ঠানিক সংলাপ, অনিষ্পন্ন চুক্তি দ্রুত সম্পন্ন করা এবং বাণিজ্য, কৃষি, শিক্ষা ও সংযোগের ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধির ওপর জোর দিয়েছে পাকিস্তান।
এছাড়াও, পাকিস্তানের পক্ষ থেকে তাদের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের অধ্যয়নের সুযোগ দেওয়ার প্রস্তাবের কথাও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। অন্যদিকে, বাংলাদেশ মৎস্য ও সামুদ্রিক বিষয়ে কারিগরি প্রশিক্ষণের আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলে পাকিস্তান জানিয়েছে। একইসঙ্গে, বিজ্ঞপ্তিতে দুই দেশই কানেক্টিভিটিকে (যোগাযোগ) অগ্রাধিকার দেওয়ার বিষয়ে একমত হয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. আলী রীয়াজ এনসিপির সাথে বৈঠকে ভিন্নমতের বিষয়গুলো নিয়ে খোলামেলা আলোচনার ঘোষণা দিয়েছেন। এই বৈঠকে রাজনৈতিক মতপার্থক্য ও বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে গঠনমূলক সংলাপের প্রত্যাশা ব্যক্ত করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ধরনের আলোচনা রাজনৈতিক সংকট নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। আসন্ন বৈঠকের ফলাফল নিয়ে রাজনৈতিক মহলে রয়েছে ব্যাপক কৌতূহল।
আজ শনিবার সকালে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। জাতীয় সংসদের এলডি হলে সকাল সাড়ে দশটায় শুরু হওয়া / ফাইল ছবি
Call for Ad – Banner
Call for Ad+88 01400 84 0008
আজ শনিবার তারিখঃ ১৯/০৪/২০২৫ইং সকালে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। জাতীয় সংসদের এলডি হলে সকাল সাড়ে দশটায় শুরু হওয়া এই আলোচনা সভায় কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ তার সূচনা বক্তব্যে একটি নতুন বাংলাদেশের সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এমন একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলা এখন সময়ের দাবি, যেখানে কোনো ফ্যাসিবাদী শাসনের পুনরাবৃত্তি ঘটবে না।
এনসিপি নেতাদের উদ্দেশ্যে অধ্যাপক আলী রীয়াজ আরও বলেন, বিভিন্ন সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলোর মধ্যে এনসিপির কিছু বিষয়ে সমর্থন এবং কিছু বিষয়ে ভিন্নমত থাকতে পারে। কমিশন ইতোমধ্যে ঐকমত্যের বিষয়গুলো চিহ্নিত করতে পেরেছে এবং সেগুলো নিয়ে সামনের দিকে অগ্রসর হবে। যেসব বিষয়ে আংশিক सहमति অথবা দ্বিমত রয়েছে, সেগুলো নিয়ে আজকের বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে এবং প্রয়োজনে এই আলোচনা অব্যাহত থাকবে। অধ্যাপক রীয়াজ জোর দিয়ে বলেন, তাদের প্রধান লক্ষ্য হলো জাতির আকাঙ্ক্ষা থেকে একটি জাতীয় সনদ তৈরি করা।
বৈঠকে অধ্যাপক আলী রীয়াজ এনসিপি নেতাদের ভূমিকার প্রশংসা করে বলেন, তারা জীবন বাজি রেখে লড়াই করে ফ্যাসিবাদী শাসককে পালাতে বাধ্য করেছেন। এই বিজয়ের পাশাপাশি তারা একটি নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থার সুস্পষ্ট দাবি জানিয়েছেন, যা জনগণের মধ্যে রাষ্ট্র সংস্কারের প্রবল আকাঙ্ক্ষা সৃষ্টি করেছে। তিনি অতীতের উদাহরণ টেনে বলেন, কীভাবে বারবার গণতন্ত্রের আকাঙ্ক্ষাকে দমন করা হয়েছে এবং গণতন্ত্রের সংগ্রামের মাধ্যমে অর্জিত বিজয় বিভিন্নভাবে নস্যাৎ করা হয়েছে। একটি রাষ্ট্রকে কীভাবে একজন ব্যক্তির নিয়ন্ত্রণে নিয়ে একটি বিশেষ শাসন ব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছিল, তারও উল্লেখ করেন তিনি। বর্তমানে একটি নতুন বাংলাদেশের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে মন্তব্য করে অধ্যাপক রীয়াজ বলেন, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এমন একটি বাংলাদেশ গড়ে তোলা উচিত, যেখানে ফ্যাসিবাদী শাসনের প্রত্যাবর্তন ঘটবে না, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো স্থায়ী হবে এবং জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে। তিনি আরও বলেন, গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং সকল প্রকার নিপীড়ন মোকাবিলা করে সেই ব্যবস্থাগুলো অপসারণ করতে হবে।
সভায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, ইফতেখারুজ্জামান এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এনসিপির আট সদস্যের প্রতিনিধি দলে নেতৃত্ব দেন আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম এবং সদস্যসচিব আখতার হোসেন। দলের অন্য সদস্যরা ছিলেন জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার, জাবেদ রাসিন, মূখ্য সমন্বয়ক নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ এবং সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব নাহিদা সারোয়ার নিভা।
কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে এক গৃহবধূকে শিকল দিয়ে বেঁধে পাশবিক ধর্ষণ ও নির্যাতনের মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় থানায় মামলা দায়েরের পর পুলিশ প্রধান আসামিকে গ্রেফতার করেছে। এই নৃশংস ঘটনায় এলাকায় তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়েছে। ভুক্তভোগীর ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে তদন্ত চলছে। স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে এক মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে, যেখানে স্বামী কর্মস্থলে থাকার সময় এক ২২ বছর বয়সী গৃহবধূ তার নিজ বাড়িতে ভয়াবহ নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই নারী, যার সঙ্গে তার অসুস্থ ৭০ বছর বয়সী শাশুড়ি ও দুই বছর বয়সী কন্যাসন্তান থাকেন, দাবি করেছেন যে দেশি অস্ত্রধারী তিনজন ব্যক্তি জোরপূর্বক তার ঘরে প্রবেশ করে এবং শিকল দিয়ে তার হাত-পা বেঁধে পাশবিক নির্যাতন চালায়।
নির্যাতনের শিকার ওই নারী আরও অভিযোগ করেন যে দুর্বৃত্তরা শুধু তাই নয়, ঘর থেকে নগদ টাকা, সোনার গয়না এবং অন্যান্য মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে যায়। তাদের বর্বরতা এখানেই থামেনি; পালিয়ে যাওয়ার আগে তারা ঘরের কাপড়ে আগুন ধরিয়ে দেয়।
এই ন্যক্কারজনক ঘটনাটি গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে নাঙ্গলকোট উপজেলার একটি গ্রামে ঘটে। পরদিন, শুক্রবার, ভুক্তভোগী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা খুঁজে পাওয়ার পর পুলিশ অভিযোগটিকে একটি নিয়মিত মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করেছে। মামলায় দুজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং একজনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার মূল অভিযুক্তকে রাতেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃত তরুণের নাম মো. ইমাম হোসেন, যার বয়স ২৪ বছর এবং তিনিও নাঙ্গলকোটের বাসিন্দা। তিনি এই মামলার প্রধান অভিযুক্ত। মামলায় জাহিদুল্লাহ (২৫) নামে আরও একজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, যদিও তার বিস্তারিত ঠিকানা জানা যায়নি। ভুক্তভোগী জানিয়েছেন যে ঘটনার সময় ইমাম হোসেনের মুখে তিনি জাহিদুল্লাহর নাম শুনেছেন। মামলার অজ্ঞাতনামা তৃতীয় ব্যক্তি মুখোশ পরিহিত ছিলেন এবং তিনিই গৃহবধূকে ধর্ষণ করেছেন বলে অভিযোগ।
গৃহবধূর অভিযোগ অনুযায়ী, ঘটনার মূল হোতা ইমাম হোসেনের পরিবারের সঙ্গে তার স্বামীর পরিবারের দীর্ঘদিনের সম্পত্তি সংক্রান্ত বিরোধ রয়েছে। এই পুরনো শত্রুতার জেরেই তার ওপর এই নৃশংস হামলা চালানো হয়েছে।
আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে নাঙ্গলকোট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে ফজলুল হক গণমাধ্যমকে জানান, প্রাথমিক তদন্তে সত্যতা মেলায় মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অভিযান চালিয়ে রাতেই ইমাম হোসেনকে তার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং তাকে কুমিল্লার আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। পুলিশ পুরো বিষয়টি গভীরভাবে তদন্ত করছে এবং অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
মামলার এজাহারে গৃহবধূ উল্লেখ করেছেন যে তার স্বামী ঢাকায় একটি বেসরকারি সংস্থায় গাড়িচালক হিসেবে কর্মরত। গ্রামে তিনি তার অসুস্থ শাশুড়ি ও শিশুকন্যাকে নিয়ে বসবাস করেন। অভিযুক্ত ইমাম হোসেন ও তার সঙ্গীদের সঙ্গে তাদের পরিবারের দীর্ঘদিন ধরে শত্রুতা ছিল এবং তারা বিভিন্নভাবে গৃহবধূ ও তার পরিবারের সদস্যদের হয়রানি করত। ইমাম হোসেন এর আগেও বেশ কয়েকবার তাকে ধর্ষণের হুমকি দিয়েছিলেন। ঘটনার রাতে, ইমাম ও দুজন অজ্ঞাত ব্যক্তি দেশি অস্ত্র, লোহার শিকল ও তালা-চাবি নিয়ে তাদের বাড়িতে প্রবেশ করে গৃহবধূর কক্ষে ঢোকে। এ সময় ইমাম হোসেন তার মেয়ের জামা দিয়ে তার মুখ চেপে ধরে এবং অন্য আসামিদের সহায়তায় ওড়না দিয়ে তার মুখ বেঁধে ফেলে। এরপর লোহার শিকল দিয়ে তার হাত-পা বেঁধে তালা লাগিয়ে দেয়। অভিযোগ অনুযায়ী, ইমাম হোসেনের সহায়তায় মুখোশ পরিহিত একজন ব্যক্তি তাকে ধর্ষণ করে এবং অন্য একজন তার মাথার চুল কেটে দেয়।
গৃহবধূ তার এজাহারে আরও উল্লেখ করেন যে পাশবিক নির্যাতনের পর আসামিরা স্টিলের আলমারি ভেঙে ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা, সোনার গয়না এবং গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র লুট করে নিয়ে যায়। ঘটনার সময় ইমাম হোসেন বারবার জাহিদুল্লাহর নাম বলছিল। পরে তার অসুস্থ শাশুড়ির চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে তারা দ্রুত পালিয়ে যায়।
আজ সকালে নির্যাতিত গৃহবধূ সাংবাদিকদের কাছে তার ভয়াবহ অভিজ্ঞতার বর্ণনা দেন। তিনি বলেন, যখন ঘটনা ঘটে তখন তার মেয়ে ঘুমাচ্ছিল। তিনি বারবার নির্যাতনকারীদের কাছে মিনতি করেছিলেন, কিন্তু তারা তার কোনো কথা শোনেনি এবং একের পর এক অমানবিক নির্যাতন চালিয়ে গেছে। যাওয়ার সময় তারা আলমারি থেকে কাপড় ফেলে তাতে আগুন ধরিয়ে দেয়। তিনি এই ঘৃণ্য অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেন।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি আরও বলেন, যাওয়ার সময় লম্পটরা তাকে হুমকি দিয়ে গেছে যে ঘটনা কাউকে বললে তাকে মেরে ফেলবে। একজন তার ওপর পাশবিক নির্যাতন চালায় এবং অন্যরা তার শরীরে খারাপভাবে স্পর্শ করে। তিনি এর কঠিন শাস্তি চান। এমন ঘটনার পর তিনি জীবন্ত লাশের মতো বেঁচে আছেন।
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রীসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে রেড নোটিশের জন্য ইন্টারপোলে আবেদন করেছে বাংলাদেশ পুলিশ। আর্থিক দুর্নীতি ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে পলাতক এই ব্যক্তিদের ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। ইন্টারপোলের ওয়েবসাইটে এখনও তালিকা প্রকাশ হয়নি, তবে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
বাংলাদেশ পুলিশের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো (এনসিবি) শেখ হাসিনাসহ মোট ১২ জনের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলে রেড নোটিশ জারির জন্য আবেদন করেছে। গত বছরের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর বিদেশে পালিয়ে যাওয়া এসব ব্যক্তির বিরুদ্ধে বাংলাদেশের আদালতে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে।
যাদের বিরুদ্ধে আবেদন করা হয়েছে
শেখ হাসিনা, সাবেক প্রধানমন্ত্রী
ওবায়দুল কাদের, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মন্ত্রী
শেখ ফজলে নূর তাপস, সাবেক মেয়র, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন
তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সাবেক প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা
নসরুল হামিদ, সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী
মোহাম্মদ আলী আরাফাত, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী
বেনজীর আহমেদ, সাবেক পুলিশ প্রধান (আইজিপি)
জুলাইয়ের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১২ জন বিশিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে ‘রেড নোটিশ’ জারির জন্য আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলের কাছে অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো (এনসিবি)। বিভিন্ন দেশে পলাতক এই ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি ধাপে ইন্টারপোলের কাছে এই অনুরোধ পাঠানো হয়েছে।
আবেদনের প্রক্রিয়া ও অভিযোগ:
যাদের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারির আবেদন করা হয়েছে, তাদের মধ্যে রয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং প্রাক্তন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, প্রাক্তন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, প্রাক্তন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, প্রাক্তন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রাক্তন মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর প্রতিরক্ষা বিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, প্রাক্তন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, প্রাক্তন তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত এবং প্রাক্তন আইজিপি বেনজীর আহমেদ। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে বেনজীরের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারির অনুরোধ করা হয়। এর আগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের প্রেক্ষিতে ঢাকার একটি আদালত বেনজীরের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারির ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন।
Call for Ad – Banner
Call for Ad+88 01400 84 0008
পুলিশ সদর দপ্তরের সূত্র অনুযায়ী, আদালত, সরকারি আইনজীবী অথবা তদন্ত সংস্থার অনুরোধের ভিত্তিতে পুলিশ সদর দপ্তরের এনসিবি শাখা ইন্টারপোলের কাছে রেড নোটিশ জারির জন্য অনুরোধ পাঠায়।
পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, শেখ হাসিনাসহ ১২ জনের মধ্যে বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে আর্থিক অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। বাকিদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার তথ্য-প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়েছে।
শেখ হাসিনা ও বেনজীর আহমেদ ছাড়া অন্য ১০ জনের বিরুদ্ধে ১০ এপ্রিল ইন্টারপোলের কাছে অনুরোধ পাঠানো হয়। এর আগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান সরকারি আইনজীবীর কার্যালয় থেকে তাদের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারির জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশ সদর দপ্তরে নথি ও চিঠি পাঠানো হয়।
গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান সরকারি আইনজীবীর কার্যালয় থেকে শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তারের জন্য ইন্টারপোলের কাছে রেড অ্যালার্ট জারির অনুরোধ জানানো হয়েছিল।
এনসিবি যে ১২ জনের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারির আবেদন করেছে, তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের আদালত থেকে বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
অন্যদিকে, বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারির অনুরোধ করা হয় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে। এর আগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের প্রেক্ষিতে ঢাকার একটি আদালত বেনজীরের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারির ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন।
ইন্টারপোলের কাছে রেড নোটিশ জারির আবেদনের পাশাপাশি, ভারতসহ যেসব দেশের সাথে বাংলাদেশের বন্দী বিনিময় চুক্তি রয়েছে, সেই চুক্তির আওতায় বিদেশে পলাতক ব্যক্তিদের ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে অন্তর্বর্তী সরকার। তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো মনে করছে, বন্দী বিনিময় চুক্তির আওতায় ফিরিয়ে আনা সহজ হবে না।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান এবং সেখানেই অবস্থান করছেন। বাংলাদেশের বন্দী বিনিময় চুক্তি অনুযায়ী, তাকে ফেরত আনার জন্য সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতের কাছে অনুরোধ জানিয়েছে।
তবে বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ থাকায় তার ক্ষেত্রে দ্রুত পদক্ষেপ দেখা যেতে পারে।
ইন্টারপোলের ভূমিকা ও বর্তমান অবস্থা
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তিনটি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে জুলাইয়ের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সময় সংঘটিত হত্যা, গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের একটি মামলা রয়েছে। এই মামলায় শেখ হাসিনার পাশাপাশি পুলিশের প্রাক্তন মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনও অভিযুক্ত। এছাড়া ২০১৩ সালে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের হত্যা ও নির্যাতনের ঘটনায় একটি এবং বিগত সাড়ে ১৫ বছরে গুম-খুনের ঘটনায় আরেকটি মামলা রয়েছে।
প্রধান সরকারি আইনজীবীসহ একাধিক সরকারি আইনজীবী সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার তদন্ত শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আগামীকাল রোববার এই মামলায় ট্রাইব্যুনালে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার দিন ধার্য রয়েছে।
বন্দী প্রত্যর্পণ চুক্তি ও চ্যালেঞ্জ
ইন্টারপোল বিদেশে পলাতক আসামিদের অবস্থান শনাক্ত করতে সহযোগিতা করে। অন্যদিকে, বিদেশে পলাতক ব্যক্তিদের সম্ভাব্য অবস্থান সম্পর্কে তথ্য পেলে সংশ্লিষ্ট দেশ ইন্টারপোলকে জানায়। যে ১২ জনের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারির অনুরোধ করা হয়েছে, সেগুলো বর্তমানে ইন্টারপোলে প্রক্রিয়ধীন রয়েছে।
পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (গণমাধ্যম ও জনসংযোগ) ইনামুল হক জানিয়েছেন, ইন্টারপোলের সদস্যভুক্ত দেশ এখন ১৯৬টি। অপরাধ ও অপরাধীর তথ্য যাচাই-বাছাই এবং আদান-প্রদানে এই ১৯৬টি দেশের সাথে বাংলাদেশ পুলিশের এনসিবির নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে। কোনো অপরাধী দেশ ছেড়ে অন্য দেশে অবস্থান করলে, তাকে আইনের আওতায় আনার জন্য সংশ্লিষ্ট দেশ রেড নোটিশ জারির অনুরোধ জানায়।
ইন্টারপোল যাদের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারি করে, তাদের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা সোয়া সাতটায় ইন্টারপোলের ওয়েবসাইটে ৬ হাজার ৫৮৩ জনের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ দেখা যায়, যার মধ্যে ৬২ জন বাংলাদেশি। তবে রেড নোটিশ জারির জন্য সম্প্রতি অনুরোধ করা ১২ জনের নাম তালিকায় নেই।
ইন্টারপোলের ওয়েবসাইটে রেড নোটিশ জারির তালিকায় পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) পরিদর্শক মামুন এমরান খান হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত দুবাইয়ে পলাতক রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খান, শীর্ষ সন্ত্রাসী ফেরদৌস জাহাঙ্গীর ওরফে কালা জাহাঙ্গীর, শীর্ষ সন্ত্রাসী জাফর আহমেদ মানিক, শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান আহমেদ, শীর্ষ সন্ত্রাসী প্রকাশ কুমার বিশ্বাস, প্রাক্তন সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক অভি প্রমুখের নাম রয়েছে। তালিকায় বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামিদের নাম ও ছবিও রয়েছে।
নতুন করে যে ১২ জনের জন্য রেড নোটিশ জারির অনুরোধ করা হয়েছে, তাদের নাম ইন্টারপোলের ওয়েবসাইটে না থাকার কারণ সম্পর্কে সরকার ও পুলিশের উচ্চপর্যায়ের পাঁচ কর্মকর্তার সাথে কথা বলেছে প্রথম আলো। তারা জানান, অনুরোধের পর রেড নোটিশ জারির প্রক্রিয়া শুরু হয়। তবে রাজনৈতিক ঘটনাগুলোতে ইন্টারপোল নোটিশ জারির ক্ষেত্রে অনেক যাচাই-বাছাই করে। বিদেশে অবস্থানরত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা শেখ হাসিনাসহ অন্যদের ঘটনাকে রাজনৈতিক ঘটনা হিসেবে উপস্থাপনের চেষ্টা করছে। এ কারণে নোটিশ জারির প্রক্রিয়া বিলম্বিত হতে পারে। তবে বেনজীর আহমেদের ঘটনাটি আর্থিক দুর্নীতি বা অপরাধ হওয়ায় তার বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ দেখা যেতে পারে।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অনুসন্ধান চলাকালে গত বছরের ৪ মে তিনি সপরিবারে দেশ ছাড়েন। তিনি ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আইজিপি ছিলেন। এর আগে তিনি ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২০ সালের এপ্রিল পর্যন্ত র্যাবের মহাপরিচালক ছিলেন।
প্রাক্তন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ ১০ জন গত ৫ আগস্টের আগে-পরে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। এর মধ্যে প্রাক্তন মেয়র তাপস ৩ আগস্ট দেশ ছাড়েন।
পুলিশের একটি সূত্র জানায়, জুলাইয়ের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর যারা বিদেশে পালিয়ে গেছেন, তাদের ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে প্রধান দুটি চ্যালেঞ্জ ও আশঙ্কা রয়েছে। চ্যালেঞ্জ হলো, পলাতকদের কেউ কেউ অন্য দেশের নাগরিক অথবা অন্য দেশে স্থায়ীভাবে থাকার অনুমতি রয়েছে। আর আশঙ্কা হলো, আওয়ামী লীগ সরকারের সুবিধাভোগীদের মধ্যে যারা বিদেশে পলাতক, তারা বড় অঙ্কের অর্থ খরচ করে বা লবিস্ট নিয়োগ করে তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করতে পারে।
এনসিবির সূত্রগুলো জানায়, রেড নোটিশ সরাসরি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নয়। তবে এই নোটিশ জারি হলে অভিযুক্ত ব্যক্তি আন্তর্জাতিক ভ্রমণের সময় বিমানবন্দরে বা ইমিগ্রেশনে আটক হতে পারেন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে গ্রেপ্তার হয়ে নিজ দেশে ফিরতে বাধ্য হওয়ার মতো পরিস্থিতির মুখোমুখিও হতে পারেন।
পরবর্তী পদক্ষেপ
পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (গণমাধ্যম ও জনসংযোগ) ইনামুল হক প্রথম আলোকে জানান, বিদেশে পলাতক আসামিদের অবস্থান শনাক্ত করতে ইন্টারপোল সহযোগিতা করে। অন্যদিকে, বিদেশে পলাতক ব্যক্তিদের সম্ভাব্য অবস্থান সম্পর্কে তথ্য পেলে সংশ্লিষ্ট দেশ ইন্টারপোলকে জানায়। যে ১২ জনের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারির অনুরোধ করা হয়েছে, সেগুলো বর্তমানে ইন্টারপোলে প্রক্রিয়ধীন রয়েছে।