ভারত-পাকিস্তান সংলাপে আশাবাদী ইসলামাবাদ, ইরান সফরে শাহবাজ

পাকিস্তান ভারতের সঙ্গে আলোচনায় বসার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। একইসাথে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদারে ইরান সফর করছেন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং আঞ্চলিক সহযোগিতা নিয়ে চলছে নানা কূটনৈতিক উদ্যোগ। বিস্তারিত জানুন ভারত-পাকিস্তান সংলাপ এবং শাহবাজের ইরান সফর নিয়ে।


কাশ্মীর সংকট ও পানিসম্পদ নিয়ে বিরাজমান দীর্ঘমেয়াদি জটিলতা নিরসনে ভারতের সঙ্গে সংলাপে বসার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ। সোমবার (২৬ মে) ইরান সফরে তেহরানে প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এ ইচ্ছার কথা জানান তিনি।

শাহবাজ শরীফ বর্তমানে চারটি মিত্র দেশের সফরে রয়েছেন। সফরের অংশ হিসেবে তিনি ওইসব দেশের কাছে পাকিস্তানের সাম্প্রতিক সামরিক সংকটকালে দেওয়া সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছেন। ইরান সফরের শুরুতেই তেহরানের সাদাবাদ প্রাসাদে তাকে স্বাগত জানান ইরানের প্রেসিডেন্ট। এ সময় প্রধানমন্ত্রী গার্ড অব অনার গ্রহণ করেন।

যৌথ সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী জানান, দুই দেশের প্রতিনিধি পর্যায়ের বৈঠক অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়েছে। বাণিজ্য, বিনিয়োগ, যোগাযোগ, জ্বালানি এবং আঞ্চলিক সহযোগিতাসহ নানা বিষয়ে পারস্পরিক ঐক্যমতে পৌঁছানো গেছে।

শাহবাজ বলেন, “ইরান ও পাকিস্তান—দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে, যা আমরা জীবনযাত্রার প্রতিটি ক্ষেত্রে সহযোগিতামূলক অংশীদারিতে রূপ দিতে চাই।”

তিনি আরও বলেন, ভারতের সঙ্গে সাম্প্রতিক সংঘাতকালীন সময়ে ইরানের সমর্থন পাকিস্তানকে সাহস যুগিয়েছে। পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী সাহসিকতার সাথে জবাব দিয়েছে, যা সবার সামনে প্রমাণ করেছে যে তারা নিজ ভূখণ্ড রক্ষায় অঙ্গীকারবদ্ধ।

কাশ্মীর সমস্যা ও পানিসম্পদ ইস্যুতে আলোচনার বিষয়ে তিনি বলেন, “আমরা শান্তির পক্ষে। শান্তির জন্যই আমরা প্রস্তুত। জাতিসংঘের প্রস্তাব ও ভারতের ১৯৫৪ সালের সংসদীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা আলোচনায় বসতে চাই।”

তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, “যদি ভারত আগ্রাসনের পথ বেছে নেয়, তাহলে পাকিস্তানও যথাযথ প্রতিরোধ গড়বে, যেমনটি আমরা সাম্প্রতিক হামলায় করেছি। কিন্তু যদি তারা আলোচনার আহ্বানে সাড়া দেয়, তাহলে আমরা আন্তরিকভাবে শান্তির পথে এগিয়ে যাব।”

ইরানে সফর শেষে তিনি দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এর আগে তুরস্ক সফরে গিয়ে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি, যেখানে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য এবং নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা হয়।

প্রসঙ্গত, গত মাসে কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর ভারত পাকিস্তানে সামরিক হামলা চালায়। পাল্টা জবাবে পাকিস্তানও অভিযান শুরু করে। এতে দুই দেশের মধ্যে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে তীব্র সামরিক উত্তেজনা তৈরি হয়। চারদিনের সংঘর্ষ শেষে ১০ মে যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছায় দুই দেশ।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version