নজরুলের নাম আজও সমুজ্জ্বল সূর্যের আলোর মত: ২৫ মে, নজরুলজয়ন্তীতে বাংলাদেশের শ্রদ্ধার উৎসব

হাঁটছি বাংলা একাডেমির আঙিনায়, আজকের সূর্যটা যেন একটু বেশি আলো ছড়াচ্ছে। শহরের বাতাসে এক মুগ্ধতার মৃদু সুর মিশেছে—”চল্ চল্ চল্, উর্ধ্ব গগনে বাজে মাদল…”। আজ নজরুলজয়ন্তী। বিদ্রোহের কবির জন্মদিন। কবিতার খুঁটিনাটিতে, সুরের শিল্প-ছবিতে, তবলার তালে তালে—নজরুলের কথা আজও জেগে থাকে। ঠিক ১৩০ বছর আগে, ১৮৯৯ সালের ২৪ মে (বাংলাদেশ সময় অনুযায়ী ২৫ মে) জন্মেছিলেন তিনি, কুমিল্লার চৌগাছা গ্রামে, একটি মসজিদের পাশে।

বাঙালি আজও তাকে মনে করে—যিনি ভাষায় বিদ্রোহ শিখিয়েছেন, শিখিয়েছেন ভালোবাসার ফুল ফোটাতে, দেখিয়েছেন শব্দের আগুন জ্বালাতে কবিতার পাতাতে এবং অসাধারণ লিখনীতে।আজ সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় চত্বরে

চত্বরে মানুষের ঢল। কবির প্রতিকৃতিতে মালা পরাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা, শিক্ষকরা, কবিতা পাঠ করছেন শিশুরা। বাংলাদেশ টেলিভিশনে সকাল ৯টার খবর:
“জাতীয় পর্যায়ে নজরুলজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় র‍্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত।”
শিল্পকলা একাডেমিতে চলছে নজরুল সঙ্গীত প্রতিযোগিতা, পুরস্কার বিতরণ। বাংলাদেশের শিক্ষা মন্ত্রী দীপু মনি আজ সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে নজরুল ইন্সটিটিউটে আলোচনা সভার উদ্বোধন করেছেন।

আজকের দিনে বিশেষ নজর পড়ছে নজরুলের চিরন্তন গানগুলোতে। বেতার থেকে ভেসে আসছে “কারার ঐ লৌহ কপাট…”—শ্রোতা মন ছুঁয়ে যাচ্ছে সেই বিদ্রোহের সুর।

অন্যদিকে নজরুল জন্মভূমি কুমিল্লার মাটিতেও সকাল থেকেই লোকারণ্য। মসজিদে কোরআন খতম, মাজারে ফাতেহা পাঠ, এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। কুমিল্লার ডিসি অফিস জানিয়েছে, আজ সকাল ৯টা থেকে শুরু হয়েছে আলোচনা সভা, দুপুর ১২টায় চলছে নজরুল সঙ্গীত প্রতিযোগিতা।

আজকের দিনে স্মরণ করছি নজরুলের সেই অমোঘ বাণী:
“আমি চির বিদ্রোহী বীর, বিশ্ব ছাড়ায়ে উঠিয়াছি একা…”
আজও তাই কবি, তুমি আমাদের বিদ্রোহের অনুপ্রেরণা, প্রেমের দ্যুতি, আর জাতীয় সত্তার বাতিঘর।

নজরুলজয়ন্তীর এই দিনে বাঙালি কণ্ঠে উচ্চারিত হচ্ছে একটাই কথা:
“বিদ্রোহী কবির গান থেমে যাবে না, তার আগুনের ফুলকি ছড়িয়ে যাবে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে।”


Exit mobile version