প্রাণভয়ে বাংলাদেশ ছাড়লেন হাথুরুসিংহ : বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক কোচ

বাংলাদেশে নিরাপত্তাহীনতা ও জীবননাশের হুমকির মুখে হাথুরুসিংহে দেশ ছেড়ে নেপালে আশ্রয় নিয়েছেন। তিনি দাবি করেছেন, স্থানীয় কিছু গোষ্ঠীর কাছ থেকে ক্রমাগত হুমকি পেয়ে শেষ পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন। হাথুরুসিংহের এই দেশত্যাগের ঘটনায় সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা শুরু হয়েছে। অনেকেই বাংলাদেশে বিদেশি নাগরিকদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। এই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তদন্তের দাবি উঠেছে। হাথুরুসিংহের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা এখন সকলের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু।


বিজ্ঞাপন বিহীন সংবাদ পড়তে আমাদের ফেসবুক পেজ ফলো দিন, একদেশ নিউজ খবর পেতে গুগল নিউজইউটিউব চ্যানেল ফলো করুন

৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের ঢেউ লাগে বাংলাদেশে, যার প্রভাব পড়ে ক্রিকেট জগতেও। ফলস্বরূপ, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি পদে পরিবর্তন আসে এবং ফারুক আহমেদ নতুন দায়িত্ব গ্রহণ করেন। দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই, গত অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে ফারুক আহমেদ প্রধান কোচের পদ থেকে চন্ডিকা হাথুরুসিংহেকে অব্যাহতি দেন।

[পড়ুন – ২১ ক্যারেট স্বর্ণের দর কত ]

২০২৩ সালের ভারত বিশ্বকাপে স্পিনার নাসুম আহমেদের সাথে অসদাচরণের অভিযোগ ওঠে হাথুরুসিংহের বিরুদ্ধে। এছাড়াও, তার কিছু আচরণগত সমস্যা নিয়ে বিসিবি তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠায়। হাথুরুসিংহে একদিনের মধ্যেই সেই নোটিশের জবাব দিলেও, বিসিবি সেই উত্তরকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ হিসেবে বিবেচনা করে তার সাথে চুক্তি বাতিল করে দেয়।

সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার ‘কোড স্পোর্টস’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হাথুরুসিংহে সেই সময়ের পরিস্থিতি বর্ণনা করে জানান যে, তিনি প্রাণনাশের আশঙ্কা নিয়ে বাংলাদেশ ত্যাগ করেছিলেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সিইও (নিজাম উদ্দিন চৌধুরী) আমাকে শেষবারের মতো বলেছিলেন যে আমার চলে যাওয়া উচিত এবং এই বিষয়ে বোর্ডের কাউকে কিছু জানানোর প্রয়োজন নেই। “আপনার কাছে কি (বিমানের) টিকিট আছে?” – এই প্রশ্নটি আমার কাছে একটি সতর্কবার্তা মনে হয়েছিল এবং তখনই আমি কিছুটা ভয় পেয়েছিলাম।’

বাংলাদেশের এই প্রাক্তন কোচ আরও বলেন, ‘আমি সরাসরি ব্যাংকে যাই, বাংলাদেশ ছাড়ার জন্য অর্থ তোলার চেষ্টা করছিলাম। যখন আমি ব্যাংকে, তখন টিভিতে একটি জরুরি খবর প্রচারিত হয় – “চন্ডিকা চাকরিচ্যুত, একজন খেলোয়াড়কে লাঞ্ছিত করেছেন”। এটি দেখে ব্যাংকের ব্যবস্থাপক বলেন, “কোচ, আমি আপনার সাথে যাব। রাস্তায় লোকজন আপনাকে দেখলে তা আপনার জন্য নিরাপদ নাও হতে পারে।”’

হাথুরুসিংহে আরও যোগ করেন, ‘তখন আমি সত্যিই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলাম, কারণ আমার যে কোনো মূল্যে বাংলাদেশ ত্যাগ করতে হতো। আমার এক বন্ধু আমাকে বিমানবন্দরে পৌঁছে দিয়েছিলেন। আমি একটি টুপি ও হুডি পরিহিত ছিলাম, কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল না। সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের একটি মধ্যরাতের ফ্লাইটে আমি বাংলাদেশ ছেড়ে যাই।’

গ্রেপ্তারের আশঙ্কার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে পালানোর চেষ্টার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিমানবন্দরে আমাকে গ্রেপ্তার করতে পারত। অতীতে এমন ঘটনাও ঘটেছে যে আগের সরকারের একজন মন্ত্রী দেশ ছাড়ার চেষ্টা করলে রানওয়েতে তার বিমান থামিয়ে তাকে নামিয়ে আনা হয়েছিল। সেই ভয়গুলোই আমার মনে ঘুরপাক খাচ্ছিল।’


Exit mobile version