বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দেশে ফেরাকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোতে বেশ আলোড়ন দেখা গেছে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ এশিয়ার সংবাদমাধ্যমগুলোতে তার প্রত্যাবর্তন রাজনৈতিক গুরুত্ব ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। অনেকে এটিকে বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন মোড় হিসেবেও দেখছেন। আন্তর্জাতিক সংবাদ বিশ্লেষকরা এর প্রভাব নিয়ে দিচ্ছেন ভিন্নমুখী মতামত।
চার মাস লন্ডনে চিকিৎসা নিয়ে আজ দুপুর ১টা ২৫ মিনিটে গুলশানের ফিরোজা বাসভবনে ফিরে এসেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। বিমানবন্দর থেকে রওনা দিয়ে তার গাড়ি গুলশানে পৌঁছালে সেখানে দলীয় নেতা-কর্মীরা ফুল, ব্যানার ও স্লোগানে তাকে বরণ করে নেন।
সকাল ১১টা ১০ মিনিটে খালেদা জিয়া ও তার দুই পুত্রবধূকে বহনকারী গাড়ি শাহজালাল বিমানবন্দর ছাড়ে। বিমানবন্দর থেকে গুলশান পর্যন্ত সড়কের দুই পাশে অবস্থান নিয়ে নেতাকর্মীরা তাকে অভ্যর্থনা জানান। কেউ তার ছবিসংবলিত টি-শার্ট পরে ছিলেন, কেউ আবার ফুল হাতে রেখেছিলেন। রাজপথ ছিল সরব—‘খালেদা জিয়ার আগমন, শুভেচ্ছা স্বাগতম’, ‘ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’ স্লোগানে।
এ ঘটনাটি শুধু দেশেই নয়, আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও গুরুত্বসহকারে প্রচার পেয়েছে। কাতারের আল জাজিরা, মালয়েশিয়ার স্ট্রেইট টাইমস, আয়ারল্যান্ডের আইরিশ নিউজ, ভারতের টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়া, যুক্তরাষ্ট্রের এবিসি নিউজ—সবগুলো সংবাদমাধ্যম খালেদা জিয়ার প্রত্যাবর্তনকে বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হিসেবে উল্লেখ করেছে।
এবিসি নিউজ জানিয়েছে, খালেদা জিয়ার ফেরা অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর নির্বাচন ত্বরান্বিত করার চাপ বাড়িয়েছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত সরকার এখন দেশ পরিচালনা করছে। এই সরকার ডিসেম্বর অথবা আগামী বছরের জুনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের কথা বলেছে।
[আরোও পড়ুনঃ ভাইয়ের জন্য চিন্তিত] [ইউটিউবে খবর দেখুন]]
আল জাজিরা বলছে, গণতন্ত্রের সংকটকালীন সময়ে দেশে ফিরলেন খালেদা জিয়া। বিএনপির নেত্রীর এ উপস্থিতি রাজনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ এবং তার দল বিএনপির জন্য প্রতীকীভাবে শক্তি সঞ্চার করেছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে, শেখ হাসিনা বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন এবং দেশের নেতৃত্বে রয়েছে একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার।
টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়া তাদের প্রতিবেদনে লিখেছে, ‘চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরলেন বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া।’ তাদের মতে, এটি আসন্ন নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ একটি ঘটনা।
স্ট্রেইট টাইমস মন্তব্য করেছে, খালেদা জিয়ার দেশে ফেরা বিএনপির নির্বাচন দাবিকে আরও জোরালো করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে আগস্টে দেশত্যাগ করেন এবং এরপর থেকেই ড. ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার দেশের দায়িত্ব পালন করছে।
আইরিশ নিউজ-সহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক মাধ্যমেও তার দেশে ফেরা নিয়ে গুরুত্বের সঙ্গে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে।