গাজীপুরে মর্মান্তিক গ্যাস বিস্ফোরণ: নিহত ৫

গাজীপুরের এই মর্মান্তিক ঘটনা একটি পরিবারকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছে। গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহারে সতর্কতা ও সরকারি পর্যায়ে কঠোর নজরদারি এই ধরনের দুর্ঘটনা রোধে জরুরি। পাশাপাশি, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারটির পুনর্বাসনে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।


গাজীপুরের জয়দেবপুরের মোগলখাল এলাকায় গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনায় দগ্ধ একই পরিবারের পাঁচ সদস্য চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। রোববার (৪ মে) রাতে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিটে (এইচডিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় সর্বশেষ মৃত্যুবরণ করে ১০ বছর বয়সী তানজিলা। এর আগে পারভিন আক্তার (৩৫), তার এক বছরের শিশুপুত্র আয়ান, সিমা আক্তার (৩০) এবং পাঁচ মাসের গর্ভবতী তাসলিমা বেগম (৩০) মারা যান।

ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ

গত শনিবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে মোগলখাল এলাকায় রান্নার সময় হঠাৎ গ্যাস সিলিন্ডারে বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণের তীব্রতায় বাড়িটি আগুনে পুড়ে যায় এবং পাঁচ সদস্য গুরুতর দগ্ধ হন। স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতায় রাত পৌনে ১১টার দিকে তাদের উদ্ধার করে ঢাকার জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়।

চিকিৎসা ও মৃত্যুর ধারাবাহিকতা

  • শিশু আয়ান: এক বছরের শিশু আয়ান শনিবার প্রথম মারা যায়।
  • সিমা আক্তার: ৯০% দগ্ধ হয়ে সোমবার (২৮ এপ্রিল) সকালে মৃত্যুবরণ করেন।
  • তাসলিমা বেগম: পাঁচ মাসের গর্ভবতী তাসলিমা ৯০% এর বেশি দগ্ধ হয়ে মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) মারা যান।
  • পারভিন আক্তার: রোববার সকালে মারা যান।
  • তানজিলা: ১০ বছর বয়সী তানজিলা ৯০% দগ্ধ হয়ে রোববার রাতে মারা যায়।

জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান তাদের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

পরিবারের করুন অবস্থা

এই ঘটনায় পরিবারটির একমাত্র বেঁচে থাকা সদস্য হলেন পারভিন আক্তারের স্বামী, যিনি ঘটনার সময় বাড়িতে ছিলেন না। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, পরিবারটি আর্থিকভাবে অসচ্ছল ছিল এবং তাদের চিকিৎসার জন্য স্থানীয়ভাবে তহবিল সংগ্রহ করা হয়েছিল।

[আরোও পড়ুনঃ প্রায় ১০ হাজার জনের ভিসার আবেদন এখনো সম্পন্ন হয়নি

গ্যাস সিলিন্ডার নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন

এই ঘটনা গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহারে নিরাপত্তা ব্যবস্থার গুরুত্বকে আবারও সামনে নিয়ে এসেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিয়মিত সিলিন্ডার ও গ্যাস লাইন চেকআপ, ভালো ভেন্টিলেশন এবং জরুরি অবস্থায় ফায়ার এক্সটিংগুইশার ব্যবহার এই ধরনের দুর্ঘটনা কমাতে পারে।

সরকার ও স্থানীয় প্রশাসনের ভূমিকা

গাজীপুর জেলা প্রশাসন ও ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে তদন্ত শুরু করেছে। স্থানীয় সংসদ সদস্য পরিবারটির পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিয়েছেন। এ ধরনের দুর্ঘটনা রোধে গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহারে সচেতনতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে


Exit mobile version