পুলিশের চাঁদা কেলেঙ্কারি! কলাবাগান থানার তিন কর্মকর্তা প্রত্যাহার

কলাবাগান থানায় কোটি টাকা চাঁদা আদায়ের অভিযোগে ওসি ও দুই এসআইকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। পুলিশ সদর দপ্তরের তদন্তে তাদের জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে বলে জানা গেছে। এই কেলেঙ্কারির ঘটনায় থানার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে এবং উচ্চপর্যায় থেকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বিস্তারিত খবর জানতে আমাদের প্রতিবেদন পড়ুন।


কলাবাগান থানার ওসি ও এসআই-এর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও মিথ্যা মামলার অভিযোগ – সাময়িক বরখাস্ত

রাজধানীর কলাবাগান থানার কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, জোরপূর্বক অর্থ আদায় ও মিথ্যা মামলার হুমকির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় থানার ওসি মোক্তারুজ্জামান এবং এসআই বেলাল হোসেন ও মান্নানকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশন বিভাগের প্রধান মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এ নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

ঘটনার বিবরণ

শিক্ষাবিদ ও কলামিস্ট ড. আব্দুল ওয়াদুদ কলাবাগান থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তার বর্ণনায় জানা যায়, গত ২৯ এপ্রিল রাত আনুমানিক দেড়টার দিকে এসআই বেলালের নেতৃত্বে একদল পুলিশ সদস্য ও ১৫-২০ জন সন্ত্রাসী তার বাসায় জোরপূর্বক প্রবেশ করে। বাসার ম্যানেজার ৯৯৯-এ কল করলে পুলিশের একটি গাড়ি ঘটনাস্থলে আসে। তবে কলাবাগান থানার ওসি মোক্তার হোসেন শাহবাগ ও নিউমার্কেট থানার টহল টিমকে চলে যেতে নির্দেশ দেন।

ড. ওয়াদুদ জানান, পুলিশ সদস্যরা তার বাসার তৃতীয় তলার দরজা ভাঙার চেষ্টা করে। এ সময় তার ৯০ বছর বয়সী মা ও স্ত্রী আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করার পর এসআই বেলাল ও মান্নান তাকে ধাক্কা দিয়ে ঘরের ভেতরে টেনে নেয় এবং অস্ত্রের খোঁজ করতে থাকে। পরে মান্নান নামের এক পুলিশ সদস্য তাকে ১ কোটি টাকা দাবি করে এবং বলে, “টাকা না দিলে ১০টি মামলায় জড়িয়ে দেওয়া হবে।” চাপের মুখে ড. ওয়াদুদ ২ লক্ষ টাকা হস্তান্তর করেন এবং বাকি টাকা ব্যাংকিং আওয়ারের মধ্যে দিতে সম্মত হন।

লুটপাট ও ভীতি প্রদর্শন

পুলিশ সদস্যরা ড. ওয়াদুদের বাসা থেকে ল্যাপটপ, সিসি ক্যামেরার হার্ডডিস্ক ও অন্যান্য মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে যায়। তার মিনি চিড়িয়াখানায় লাইসেন্সধারী হরিণ ও বিদেশি পাখিগুলোর ক্ষতি করা হয়। একটি গর্ভবতী হরিণ অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মারা যায়। পুলিশ সদস্যরা জোরপূর্বক একটি স্বীকারোক্তিমূলক ভিডিও ধারণ করে, যাতে দেখানো হয় যে বাসায় কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।

[আরোও পড়ুনঃ গ্রেফতার চিন্ময় দাস]

বর্তমান অবস্থা

ড. ওয়াদুদ এখনও সন্ত্রাসীদের ভয়ে বাসায় ফিরতে পারছেন না। অজ্ঞাত লোকজন তার বাসার আশেপাশে ঘোরাফেরা করছে বলে তিনি জানান। যদিও থানা থেকে ল্যাপটপ ফেরত দেওয়া হয়েছে, তবে অন্যান্য জিনিসপত্র এখনও উদ্ধার হয়নি।

তদন্ত ও পদক্ষেপ

ডিএমপি এই ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে এবং সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্যদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে ড. ওয়াদুদ দাবি করেছেন, শুধু বরখাস্তই যথেষ্ট নয়, দোষীদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।


#ঢাকা_অপরাধ #মিথ্যা_মামলা #ডিএমপি_তদন্ত #পুলিশ_চাঁদাবাজি #কলাবাগান_থানা_স্ক্যান্ডাল

Exit mobile version