তিন পর্যায়ে কমলো ইন্টারনেট খরচ

দেশে ইন্টারনেট সেবার মূল্য তিন পর্যায়ে কমানো হয়েছে, যা গ্রাহকদের জন্য একটি বড় সুখবর। টেলিকম রেগুলেটরি অথরিটি ও সরকারের সমন্বিত উদ্যোগে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, যাতে ডিজিটাল সেবা আরও সাশ্রয়ী হয়। প্রথম ধাপে ১০%, দ্বিতীয়তে ১৫% এবং তৃতীয় পর্যায়ে ২০% পর্যন্ত দাম কমতে পারে। এই পদক্ষেপ ডাটা ব্যবহারকারী, ফ্রিল্যান্সার ও ব্যবসায়ীদের জন্য সহায়ক হবে। ইন্টারনেটের প্রসার ও গতিশীলতা বাড়াতে নীতিনির্ধারকদের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।


বিজ্ঞাপন বিহীন সংবাদ পড়তে আমাদের ফেসবুক পেজ ফলো দিন, একদেশ নিউজ খবর পেতে গুগল নিউজইউটিউব চ্যানেল ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব সম্প্রতি জানিয়েছেন, দেশব্যাপী তিন ধাপে ইন্টারনেটের মূল্য হ্রাস করা হচ্ছে। সোমবার সকালে তার ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এই তথ্যটি তিনি সকলের সাথে ভাগ করে নেন। তিনি উল্লেখ করেন যে, ফাইবার অ্যাট হোম তাদের আইটিসি (আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ সার্কিট), আইআইজি (ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে) এবং এনটিটিএন (ন্যাশনাল ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক) স্তরে ইন্টারনেটের দাম যথাক্রমে ১০, ১০ এবং ১৫ শতাংশ কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব আরও জানান, ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সম্মিলিত সংস্থা আইএসপিএবি সম্প্রতি ঘোষণা করেছে যে, এখন থেকে গ্রাহকদের ১০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট সংযোগ ৫০০ টাকায় দেওয়া হবে। এছাড়াও, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিসিএল) আন্তর্জাতিক গেটওয়ে পর্যায়ে তাদের সকল সেবার ওপর ইতিমধ্যেই ১০ শতাংশ ছাড় দিয়েছে। সরকারি মোবাইল অপারেটর টেলিটক ঈদ-উল-ফিতরের দিন থেকে ১০ শতাংশ সাশ্রয়ে মোবাইল ইন্টারনেট সরবরাহ করছে বলেও তিনি জানান।

মেসির পারফরম্যান্সে উত্তাল স্টেডিয়াম

মোবাইল অপারেটরদের প্রতি ইন্টারনেটের দাম কমানোর আহ্বান জানিয়ে ফয়েজ আহমদ বলেন, সরকার ইতিমধ্যে মোবাইল কোম্পানিগুলোকে ডিডব্লিউডিএম ও ডার্ক ফাইবারের মতো আধুনিক সুবিধা দিয়েছে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ও জাতীয় পর্যায়ে যৌথ উদ্যোগে পাইকারি ইন্টারনেটের দাম কমানো হয়েছে। ফলস্বরূপ, বেসরকারি মোবাইল কোম্পানিগুলোর এখন আর দাম না কমানোর কোনো সঙ্গত কারণ অবশিষ্ট নেই।

তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, চলমান দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রেক্ষাপটে মোবাইল ইন্টারনেটের দাম কমানো হলে সাধারণ মানুষের আর্থিক কষ্টের কিছুটা উপশম হবে। সরকারের চাওয়া হলো মোবাইল কোম্পানিগুলো দুটি দিক থেকে মূল্যছাড় প্রদান করুক: প্রথমত, পূর্বে শুল্ক বৃদ্ধির ফলে যে অতিরিক্ত দাম ধার্য করা হয়েছিল তা প্রত্যাহার করা; এবং দ্বিতীয়ত, আইটিসি, আইআইজি ও এনটিটিএন পর্যায়ে যে হারে পাইকারি দাম কমানো হয়েছে, সেই অনুপাতে গ্রাহক পর্যায়েও মূল্য হ্রাস করা।

তিনি আরও বলেন, দেশের মোবাইল ইন্টারনেটের মান নিয়ে অনেক অভিযোগ বিদ্যমান, এবং মানের তুলনায় দাম অনেক বেশি। তাই সরকারের মূল লক্ষ্য হলো, গ্রাহকদের স্বার্থে একটি ন্যায্য ও সুসংহত মূল্য নীতি বাস্তবায়ন করা।

Call for Ad – Banner
Call for Ad+88 01400 84 0008

মোবাইল সেবায় পরিবর্তন (BTRC), কতটা সুবিধা মিলবে গ্রাহকের? | একদেশ পত্রিকা

বাংলাদেশে মোবাইল অপারেটরদের জন্য বড় সিদ্ধান্ত—বিটিআরসি উঠিয়ে নিয়েছে ডিডব্লিউডিএম ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা। ইজারা নেওয়া অপটিক্যাল ফাইবারে এবার অপারেটররাই ব্যবহার করতে পারবে নেটওয়ার্ক পর্যবেক্ষণের যন্ত্র। এতে কমবে খরচ, বাড়বে সেবার মান। গ্রাহকও ভবিষ্যতে উপকৃত হবেন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। সিদ্ধান্তটি মোবাইল ইন্টারনেট সেবায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনতে পারে।


মোবাইল অপারেটরের দাবি মানা হয়েছে!

মোবাইল অপারেটরদের দীর্ঘদিনের একটি দাবি অবশেষে বাস্তবায়িত হয়েছে। এখন থেকে তারা ইজারা নেওয়া অপটিক্যাল ফাইবারে নিজস্বভাবে নেটওয়ার্ক পর্যবেক্ষণের যন্ত্র ব্যবহার করতে পারবে। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) সম্প্রতি এ সংক্রান্ত বিধিনিষেধ তুলে নিয়েছে।মোবাইল কোম্পানিগুলোর মতে, ডিডব্লিউডিএম (Dense Wavelength Division Multiplexing) নামের এই প্রযুক্তি ব্যবহারে তাদের সেবার মান উন্নত হবে এবং খরচ কিছুটা কমে আসবে। যদিও তাৎক্ষণিকভাবে গ্রাহকের খুব বড় সুবিধা মিলবে না, ভবিষ্যতে এর প্রভাব ইতিবাচক হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

মোবাইল অপারেটরদের জন্য বড় স্বস্তি, ডিডব্লিউডিএম ব্যবহারে আর বাধা নেই


অতীতের প্রেক্ষাপট

২০১২ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত মোবাইল অপারেটররা বিটিআরসির অনুমতিতে ডিডব্লিউডিএম প্রযুক্তি ব্যবহার করে আসছিল। তবে ২০২১ সালে, আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে এই যন্ত্র ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করে বিটিআরসি। এরপর থেকে শুধু নেশনওয়াইড টেলিকমিউনিকেশন ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক (এনটিটিএন) অপারেটররাই এই প্রযুক্তির সুবিধা নিতে পারত।

এনটিটিএন অপারেটররা দেশে অপটিক্যাল ফাইবার স্থাপন করে থাকে এবং মোবাইল অপারেটরদের তা ভাড়া দিয়ে ব্যান্ডউইডথ সরবরাহ করে। সেই সময় ডিডব্লিউডিএম ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা থাকায়, এনটিটিএন অপারেটরদের যন্ত্র থেকেই মোবাইল অপারেটরদের সেবা নিতে হতো এবং সে জন্য তাদের অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতে হতো। মূলত এনটিটিএন অপারেটরদের ব্যবসায়িক সুবিধা দিতেই মোবাইল কোম্পানিগুলোর জন্য সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হয়েছিল বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন।

নতুন সিদ্ধান্তে সম্ভাব্য সুফল

১০ এপ্রিল বিটিআরসি এক বিজ্ঞপ্তিতে মোবাইল অপারেটরদের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত জানায়। এতে করে অপারেটররা এখন সরাসরি ডিডব্লিউডিএম প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারবে, যা নেটওয়ার্ক পর্যবেক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণে আরও কার্যকর হবে।

টেলিযোগাযোগ খাতের সংশ্লিষ্টদের মতে, এই যন্ত্র ব্যবহার করলে নেটওয়ার্কে কোনো সমস্যা দ্রুত শনাক্ত করা যায়, ইন্টারনেট সংযোগ আরও স্থিতিশীল হয় এবং উচ্চগতির সেবা নিশ্চিত করা সহজ হয়।

রবি আজিয়াটার করপোরেট ও রেগুলেটরি বিভাগের প্রধান সাহেদ আলম বলেন, “এটা বিশাল কোনো অর্থনৈতিক সুবিধা না হলেও, খরচ কমে আসবে। আর খরচ কমলে তার প্রভাব গ্রাহকের দিকেও পড়বে, এটা স্বাভাবিক।”

বাংলালিংকের করপোরেট অ্যাফেয়ার্স প্রধান তাইমুর রহমান জানান, “এখনই সেবার দামে কোনো পরিবর্তন আসবে কি না বলা যাচ্ছে না। আমরা সময় নিয়ে দেখব, কীভাবে গ্রাহককে আরও ভালো সুবিধা দেওয়া যায়।”


,

গ্রাহকের দৃষ্টিকোণ

বর্তমানে দেশের প্রায় ১১ কোটি ৬০ লাখ মানুষ মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহার করেন (বিটিআরসি, ফেব্রুয়ারি ২০২৫)। ফলে মোবাইল ইন্টারনেটের মান ও খরচ নিয়ে সাধারণ মানুষের আগ্রহ সবসময়ই বেশি। এই সিদ্ধান্তের প্রভাবে নেটওয়ার্কের গুণগত মানের উন্নতি এবং ভবিষ্যতে খরচ কমার সম্ভাবনা গ্রাহকের জন্য ইতিবাচক বার্তা হতে পারে।


Exit mobile version