ভিসি অপসারণের দাবিতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে উত্তাল পরিস্থিতি

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন শুধুমাত্র উপাচার্যের অপসারণের দাবিতেই সীমাবদ্ধ নেই, বরং এটি একটি বৃহত্তর গণতান্ত্রিক ও শিক্ষার অধিকারের লড়াই। প্রশাসন যদি দ্রুত এই সমস্যার সমাধানে এগিয়ে না আসে, তাহলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হতে পারে। সকল পক্ষের সংলাপ ও সমঝোতার মাধ্যমে এই সংকট সমাধানের আহ্বান জানানো হয়েছে।


বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের অপসারণ দাবিতে শিক্ষার্থীদের তীব্র বিক্ষোভ

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিনের অপসারণের দাবিতে শিক্ষার্থীরা সোমবার (৫ মে) বেলা ১১টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। এই বিক্ষোভে উপাচার্যের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলে ধরা হয়, যার মধ্যে প্রধান ছিল ফ্যাসিস্ট শিক্ষকদের পুনর্বাসন, শিক্ষার্থীদের ২২ দফা দাবি বাস্তবায়নে ব্যর্থতা এবং আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়ার ঘটনা।

বিক্ষোভের কারণ ও শিক্ষার্থীদের দাবি

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন যে, উপাচার্য ড. শুচিতা শরমিন দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে প্রশাসনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে ফ্যাসিস্ট ও বিতর্কিত শিক্ষকদের পুনর্বাসন করেছেন। এছাড়া, শিক্ষার্থীদের ২২ দফা দাবি দীর্ঘদিন ধরে উপেক্ষিত হচ্ছে। তারা আরও জানান, যৌক্তিক আন্দোলন দমনের জন্য শিক্ষার্থীদের নামে মামলা দেওয়া হচ্ছে, যা গণতান্ত্রিক অধিকারের লঙ্ঘন।

একটি মর্মান্তিক ঘটনার কথাও উল্লেখ করেন শিক্ষার্থীরা। ক্যান্সার আক্রান্ত ববি শিক্ষার্থী জেবুন্নেছা হক জিমি উপাচার্যের কাছে চিকিৎসার জন্য সহায়তা চেয়েও তা পাননি এবং শেষ পর্যন্ত বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করেন। এই ঘটনায় শিক্ষার্থীরা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

অবরোধ ও হুঁশিয়ারি

বিক্ষোভের সময় শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেন। তারা স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে, যদি উপাচার্যকে অবিলম্বে অপসারণ না করা হয়, তাহলে তারা বিশ্ববিদ্যালয়সহ গোটা দক্ষিণাঞ্চল শাটডাউন করে দেবেন। তাদের এই অবস্থান কর্মসূচিতে স্থানীয় জনগণও সমর্থন জানিয়েছেন বলে জানা গেছে।

প্রশাসনের জবাব ও পরিস্থিতি

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়নি। তবে, অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গেছে, উপাচার্য ড. শুচিতা শরমিন এই বিষয়ে শীঘ্রই একটি প্রেস কনফারেন্স করতে পারেন। অন্যদিকে, পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসন বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণ রাখতে নজরদারি করছে।

শিক্ষার্থীদের下一步 কর্মপরিকল্পনা

শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, তাদের দাবি না মানা হলে তারা ধাপে ধাপে আন্দোলন তীব্রতর করবেন। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে তারা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবরোধ কর্মসূচি পালন করতে পারেন। এছাড়া, তারা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোর কাছে এই বিষয়ে আবেদন করার পরিকল্পনা করছেন।

সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রভাব

এই ঘটনায় স্থানীয় রাজনৈতিক দলগুলোও সক্রিয় হয়ে উঠেছে। কিছু সংগঠন শিক্ষার্থীদের সমর্থন জানিয়েছে, আবার কিছু গোষ্ঠী সংলাপের মাধ্যমে সমাধানের পথ খুঁজতে বলেছে। এই বিক্ষোভের প্রভাব পড়তে পারে দক্ষিণাঞ্চলের রাজনৈতিক ও শিক্ষা পরিস্থিতিতে।

[আরোও পড়ুনঃ নিউজিল্যান্ডকে উড়িয়ে দিল বাংলাদেশ-19]

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন শুধুমাত্র উপাচার্যের অপসারণের দাবিতেই সীমাবদ্ধ নেই, বরং এটি একটি বৃহত্তর গণতান্ত্রিক ও শিক্ষার অধিকারের লড়াই। প্রশাসন যদি দ্রুত এই সমস্যার সমাধানে এগিয়ে না আসে, তাহলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হতে পারে। সকল পক্ষের সংলাপ ও সমঝোতার মাধ্যমে এই সংকট সমাধানের আহ্বান জানানো হয়েছে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version