যাকে একসময় ‘কৃষক লিগ’ বলে উপহাস করা হয়েছিল, সেই দলই এখন টুর্নামেন্টের ফাইনালে পৌঁছে গেছে। তাদের এই অভূতপূর্ব সাফল্য সমস্ত সমালোচনা ও কটাক্ষকে মিথ্যা প্রমাণ করেছে। মাঠের পারফরম্যান্সে তারা প্রমাণ করেছে, প্রতিভা ও দলগত ঐক্য যে কোনো লেবেলকে অতিক্রম করতে পারে। এই অপ্রত্যাশিত যাত্রা টুর্নামেন্টকে আরও রোমাঞ্চকর করে তুলেছে এবং দর্শকদের মধ্যে নতুন করে আগ্রহ সৃষ্টি করেছে।
‘কৃষক লিগ’ তকমা নিয়ে রসিকতা, পিএসজি উত্তর দিল মাঠেই
অনেকেই ঠাট্টা করে বলে থাকেন, ফ্রান্সের লিগ আঁ আসলে এক ধরনের ‘কৃষক লিগ’, যেখানে পিএসজি হচ্ছে বড়জোর ‘জোতদার’, আর বাকি দলগুলো যেন ‘বর্গাচাষি’। এর পেছনে যুক্তি হিসেবে ধরা হয়—সাম্প্রতিক ১৩ মৌসুমের মধ্যে ১১ বারই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে প্যারিস সেন্ট জার্মেইন, আর অন্য দলগুলো যেন কেবল উপস্থিতির জন্যই অংশ নেয়।
তবে মাঠের পারফরম্যান্সে এবার এই ‘ফারমার্স লিগ’ ব্যঙ্গকে কার্যত উত্তর দিয়ে দিয়েছে পিএসজি। ইউরোপের সেরা ক্লাব টুর্নামেন্টে টানা প্রিমিয়ার লিগের চারটি দলকে হারিয়ে উঠে গেছে চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে। লিগ পর্বেই তারা ৪-২ গোলে হারিয়েছিল চারবারের ইংলিশ চ্যাম্পিয়ন ম্যানচেস্টার সিটিকে। এরপর একে একে বিদায় করেছে লিভারপুল, অ্যাস্টন ভিলা এবং সেমিফাইনালে আর্সেনালকে—যাদের সবাই ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের শীর্ষ পর্যায়ের ক্লাব।
গতরাতের সেমিফাইনালের ফিরতি লেগে আর্সেনালকে ২-১ গোলে হারায় পিএসজি। দুই লেগ মিলিয়ে তাদের জয় ৩-১ গোলে। এর মধ্য দিয়ে ইতিহাসে দ্বিতীয়বারের মতো ইউরোপসেরার মঞ্চে ফাইনালে উঠেছে ফরাসি জায়ান্টরা।
ম্যাচ শেষে পিএসজি কোচ লুইস এনরিকে স্বভাবসুলভ কৌতুকে বলেন, ‘আমরা তো কৃষক লিগ, তাই না?’ এরপরই একটু গম্ভীর হয়ে যোগ করেন, ‘তবে আমরা আমাদের কাজটা ঠিকভাবে করে যাচ্ছি। মানুষ এখন আমাদের খেলা, মানসিকতা আর দৃঢ়তা নিয়ে আলোচনা করছে। এটি খুবই আনন্দের।’
[আরোও পড়ুনঃচূড়ান্ত রায়ের অপেক্ষা] [ইউটিউবে খবর দেখুন]]
চ্যাম্পিয়নস লিগের নতুন ফরম্যাটে নিজেদের প্রথম পাঁচ ম্যাচে তিনটিতেই হেরেছিল পিএসজি। কিন্তু জানুয়ারিতে ম্যান সিটির বিপক্ষে পাওয়া ৪-২ ব্যবধানের জয়ের পরই পাল্টে যায় তাদের গতিপথ। এনরিকে মনে করেন, ঐ ম্যাচ থেকেই ঘুরে দাঁড়ানোর শক্তি পেয়েছে দলটি।
২০১৪-১৫ মৌসুমে বার্সেলোনাকে ‘ট্রেবল’ জেতানো এনরিকের সামনে এখন পিএসজিকেও একই কীর্তির দিকে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ। ইতিমধ্যে লিগ আঁ’র শিরোপা নিশ্চিত করেছে তারা। সামনে রয়েছে দুটি ফাইনাল—২৪ মে ফ্রেঞ্চ কাপ, প্রতিপক্ষ রেঁস; আর ৩১ মে চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে মুখোমুখি হবে ইন্টার মিলান।