“নাহিদের স্পষ্ট বার্তা: সংবিধান সংস্কার ছাড়া নতুন বাংলাদেশ অসম্ভব”

“নাহিদের নতুন বক্তব্যে উঠে এসেছে সংবিধান পুনর্লিখনের জরুরি প্রয়োজনীয়তা। তাঁর মতে, নতুন বাংলাদেশ গঠনের জন্য বর্তমান সংবিধান পরিবর্তন অপরিহার্য। জানুন কেন তিনি মনে করেন সংবিধান সংস্কার ছাড়া প্রকৃত পরিবর্তন সম্ভব নয়, এই দাবির পেছনের যুক্তি এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষণ।”


সংবিধান সংস্কারে নাগরিক জোটের ৭ প্রস্তাব: গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লড়াই

রাজধানীর মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে রোববার (১১ মে) অনুষ্ঠিত ‘সংবিধান সংস্কারে নাগরিক জোটের ৭ প্রস্তাব’ শীর্ষক আলোচনা সভায় দেশের গণতান্ত্রিক কাঠামো পুনর্গঠনে জরুরি সংস্কারের আহ্বান জানানো হয়েছে। নাগরিক কোয়ালিশনের আয়োজনে এই অনুষ্ঠানে বক্তারা বর্তমান সংবিধানের সীমাবদ্ধতা ও ভবিষ্যৎ রূপরেখা নিয়ে গভীর বিশ্লেষণ উপস্থাপন করেন।

নাগরিক নেতাদের মূল বক্তব্য:

নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি নাহিদ ইসলাম তার বক্তব্যে সংবিধানের বর্তমান কাঠামোকে ‘মানবাধিকার রক্ষায় ব্যর্থ’ বলে অভিহিত করেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, “একটি সংস্কৃত সংবিধানই কেবল রাষ্ট্র ও জনগণের মধ্যে ভাঙা আস্থার সেতুবন্ধন তৈরি করতে পারে। আমাদের এখন মৌলিক সংস্কারের দিকে মনোযোগ দিতে হবে। অগুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ঐক্যমত নয়, বরং রাষ্ট্রের মৌল কাঠামোতে পরিবর্তন আনতে হবে।”

[আরোও পড়ুনঃ হাসনাতের চূড়ান্ত শর্ত] >> [ইউটিউবে খবর দেখুন]

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধকরণ প্রসঙ্গ:

নাহিদ ইসলাম আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধকরণ প্রক্রিয়া সম্পর্কে মন্তব্য করে বলেন, “বিচারিক প্রক্রিয়া ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। এখন প্রয়োজন একটি স্পষ্ট রোডম্যাপ উপস্থাপন, যা জনগণের আস্থা অর্জনে সহায়ক হবে।” তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, সংস্কারে সমঝোতা হলে নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে কোনো বিরোধ থাকবে না।

৭টি মূল প্রস্তাব:

১. সংবিধানে মৌলিক অধিকার অধ্যায় পুনর্গঠন
২. নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিতকরণ
৩. বিচার বিভাগের পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন
৪. স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে শক্তিশালীকরণ
৫. সামরিক বাহিনীর ভূমিকা স্পষ্টকরণ
৬. সংখ্যালঘু ও আদিবাসী অধিকার সুরক্ষা
৭. ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ নাগরিক স্বাধীনতা হরণকারী আইন পর্যালোচনা

অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিশিষ্টজনেরা:

  • আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল
  • প্রেস সচিব শফিকুল আলম
  • বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন আহমেদ
  • জামায়াত নেতা মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন
  • নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না
  • এনসিপি নেতা সারওয়ার তুষার
  • গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি
  • মানবাধিকার কর্মী আইরিন খান
  • ছাত্রনেতা উমামা ফাতেমা

বিশ্লেষকদের মতামত:

আইন বিশেষজ্ঞ আসিফ নজরুল সংবিধান সংস্কারকে ‘সময়ের দাবি’ বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, “১৯৭২ সালের মূল চেতনায় ফিরে যাওয়া এখন জরুরি।” অন্যদিকে, মানবাধিকার কর্মী আইরিন খান সতর্ক করে দিয়ে বলেন, “সংবিধান সংস্কার প্রক্রিয়ায় সব স্তরের মানুষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।”

[আরোও পড়ুনঃ গণঅধাকারের আইনি চ্যালেঞ্জ] >> [ইউটিউবে খবর দেখুন]

ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা:

নাগরিক কোয়ালিশন আগামী তিন মাসের মধ্যে দেশব্যাপী গণশুনানি আয়োজনের পরিকল্পনা করেছে। এছাড়া সংসদ সদস্যদের নিয়ে একটি ক্রস-পার্টি সংলাপেরও প্রস্তাব রাখা হয়েছে। সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এই আন্দোলনকে সম্প্রসারিত করতে কাজ করবে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *