ফরিদপুরে এক ঠিকাদারের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে একটি চিরকুটও পাওয়া যায়, যা রহস্য ও প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। আত্মহত্যা না পরিকল্পিত হত্যা—এই মৃত্যু ঘিরে তৈরি হয়েছে নানা জল্পনা-কল্পনা।
ফরিদপুরে ঠিকাদারের রহস্যজনক মৃত্যু, সুইসাইড নোটে রাজনীতিকের নাম
ফরিদপুর সদর উপজেলার কৈজুরি গ্রামে এক ঠিকাদার ও ব্যবসায়ী নুরুজ্জামান বুলবুল (৪৮)-এর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার (১২ মে) বিকেলে তাঁর পৈতৃক বাড়ির দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষ থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
কোতোয়ালি থানার পুলিশ জানায়, ঘটনাস্থল থেকে একাধিক সুইসাইড নোট উদ্ধার করা হয়েছে, যার একটিতে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের এক নেতার নাম উল্লেখ রয়েছে।
একটি চিরকুটে লেখা ছিল: “বিল্লাল ভাই আমাকে আর বাঁচতে দিলেন না”—যা থেকে ধারণা করা হচ্ছে যে, এতে ইঙ্গিত করা ব্যক্তি ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক বিল্লাল হোসেন। তিনি অতীতে আলোচিত একটি মানি লন্ডারিং মামলায় কারাভোগ করেন এবং সাবেক মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের ভাই খন্দকার মোহতেশাম হোসেন বাবরের খামারে ম্যানেজার হিসেবেও কাজ করেছেন।
[আরোও পড়ুনঃরাজনীতির নতুন যাত্রা] >> [ইউটিউবে খবর দেখুন]
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিহত বুলবুল ও বিল্লাল হোসেনের মধ্যে ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিল। তাঁরা মুন্সিবাজার বাইপাসে যৌথভাবে একটি ভবন নির্মাণ করেন। তবে বিগত সময়ে আর্থিক ও পারিবারিক বিভিন্ন কারণে তাঁদের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়।
নিহতের পরিবার জানিয়েছে, বুলবুলের স্ত্রী ও তিন মেয়ে রয়েছে। তাঁর মেঝ মেয়ের দ্বিতীয় বিয়ে হয় জেলা ছাত্রলীগের এক নেতার সঙ্গে, যা নিয়ে পরিবারে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দেয়। এরপর পারিবারিক টানাপোড়েন মেটাতে বুলবুল কিছু জমি মেয়েদের নামে লিখে দেন।
আরেকটি চিরকুটে তিনি লেখেন: “আল্লাহ যদি মৃত্যু দেন, আমার মেয়েরা যেন আমার মরামুখ না দেখে। আমাকে মায়ের কবরের পাশে দাফন করবেন, এই বাড়িতে নয়।”
[আরোও পড়ুনঃবিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে প্রাণ গেল যুবকের] >> [ইউটিউবে খবর দেখুন]
ঘটনার পর সাংবাদিকরা একাধিকবার আওয়ামী লীগ নেতা বিল্লাল হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘সাময়িকভাবে আত্মহত্যা বলে মনে হচ্ছে, তবে ময়নাতদন্ত ও তদন্তের ভিত্তিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’