রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. আলী রীয়াজ এনসিপির সাথে বৈঠকে ভিন্নমতের বিষয়গুলো নিয়ে খোলামেলা আলোচনার ঘোষণা দিয়েছেন। এই বৈঠকে রাজনৈতিক মতপার্থক্য ও বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে গঠনমূলক সংলাপের প্রত্যাশা ব্যক্ত করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ধরনের আলোচনা রাজনৈতিক সংকট নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। আসন্ন বৈঠকের ফলাফল নিয়ে রাজনৈতিক মহলে রয়েছে ব্যাপক কৌতূহল।
বিজ্ঞাপন বিহীন সংবাদ পড়তে আমাদের ফেসবুক পেজ ফলো দিন, একদেশ নিউজ খবর পেতে গুগল নিউজ ও ইউটিউব চ্যানেল ফলো করুন

আজ শনিবার তারিখঃ ১৯/০৪/২০২৫ইং সকালে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। জাতীয় সংসদের এলডি হলে সকাল সাড়ে দশটায় শুরু হওয়া এই আলোচনা সভায় কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ তার সূচনা বক্তব্যে একটি নতুন বাংলাদেশের সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এমন একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলা এখন সময়ের দাবি, যেখানে কোনো ফ্যাসিবাদী শাসনের পুনরাবৃত্তি ঘটবে না।
এনসিপি নেতাদের উদ্দেশ্যে অধ্যাপক আলী রীয়াজ আরও বলেন, বিভিন্ন সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলোর মধ্যে এনসিপির কিছু বিষয়ে সমর্থন এবং কিছু বিষয়ে ভিন্নমত থাকতে পারে। কমিশন ইতোমধ্যে ঐকমত্যের বিষয়গুলো চিহ্নিত করতে পেরেছে এবং সেগুলো নিয়ে সামনের দিকে অগ্রসর হবে। যেসব বিষয়ে আংশিক सहमति অথবা দ্বিমত রয়েছে, সেগুলো নিয়ে আজকের বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে এবং প্রয়োজনে এই আলোচনা অব্যাহত থাকবে। অধ্যাপক রীয়াজ জোর দিয়ে বলেন, তাদের প্রধান লক্ষ্য হলো জাতির আকাঙ্ক্ষা থেকে একটি জাতীয় সনদ তৈরি করা।
বৈঠকে অধ্যাপক আলী রীয়াজ এনসিপি নেতাদের ভূমিকার প্রশংসা করে বলেন, তারা জীবন বাজি রেখে লড়াই করে ফ্যাসিবাদী শাসককে পালাতে বাধ্য করেছেন। এই বিজয়ের পাশাপাশি তারা একটি নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থার সুস্পষ্ট দাবি জানিয়েছেন, যা জনগণের মধ্যে রাষ্ট্র সংস্কারের প্রবল আকাঙ্ক্ষা সৃষ্টি করেছে। তিনি অতীতের উদাহরণ টেনে বলেন, কীভাবে বারবার গণতন্ত্রের আকাঙ্ক্ষাকে দমন করা হয়েছে এবং গণতন্ত্রের সংগ্রামের মাধ্যমে অর্জিত বিজয় বিভিন্নভাবে নস্যাৎ করা হয়েছে। একটি রাষ্ট্রকে কীভাবে একজন ব্যক্তির নিয়ন্ত্রণে নিয়ে একটি বিশেষ শাসন ব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছিল, তারও উল্লেখ করেন তিনি। বর্তমানে একটি নতুন বাংলাদেশের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে মন্তব্য করে অধ্যাপক রীয়াজ বলেন, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এমন একটি বাংলাদেশ গড়ে তোলা উচিত, যেখানে ফ্যাসিবাদী শাসনের প্রত্যাবর্তন ঘটবে না, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো স্থায়ী হবে এবং জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে। তিনি আরও বলেন, গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং সকল প্রকার নিপীড়ন মোকাবিলা করে সেই ব্যবস্থাগুলো অপসারণ করতে হবে।
সভায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, ইফতেখারুজ্জামান এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এনসিপির আট সদস্যের প্রতিনিধি দলে নেতৃত্ব দেন আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম এবং সদস্যসচিব আখতার হোসেন। দলের অন্য সদস্যরা ছিলেন জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার, জাবেদ রাসিন, মূখ্য সমন্বয়ক নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ এবং সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব নাহিদা সারোয়ার নিভা।