মানব সভ্যতার নতুন অভিভাবক কি এআই

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কি সত্যিই প্রযুক্তির ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব দিচ্ছে? এআই কীভাবে আমাদের দৈনন্দিন জীবন ও প্রযুক্তি ব্যবস্থাকে পাল্টে দিচ্ছে—জানুন এই নিবন্ধে। বাস্তবতা, সম্ভাবনা ও সংশয় মিলিয়ে আবিষ্কার করুন প্রযুক্তির “বড় ভাই” আসলে কে।


ঢাকার এক ভোরবেলা।
জানালার কাঁচে জমে থাকা শিশিরের মতো, মানুষের মনে জমে আছে একরাশ প্রশ্ন—
আমরা কি প্রযুক্তির দাদা পেয়েছি, না কি এক ঠাণ্ডা ছায়া, যা ধীরে ধীরে গ্রাস করছে আমাদের সত্তাকে?

রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশের পাশে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকা স্মার্ট ক্যামেরা—
না সে ক্লান্ত হয়, না রোদ-বৃষ্টি বুঝে।
তবু সে ধরছে সব: অপরাধ, আচরণ আর নিঃশব্দ প্রতিবাদ, এক লেন্সে।

মাত্র তিন অক্ষরের শব্দ—এআই (AI)
তবে এই শব্দে কম্পন তৈরি হচ্ছে কোটি মানুষের জীবনে।
Stanford-এর AI Index জানাচ্ছে, ২০২৪ সালে আমেরিকায় এআই-তে বিনিয়োগ হয়েছে ১০৯ বিলিয়ন ডলার।
চীন কিছুটা পিছিয়ে, কিন্তু থেমে নেই কেউ—
এ এক নতুন যুদ্ধ: গোলাবারুদের বদলে চলছে অ্যালগরিদমের খেলা।

Anthropic-এর CEO, ডারিও আমোডেই ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন—
“পরের পাঁচ বছরে অর্ধেক হোয়াইট-কলার চাকরি চলে যাবে এআই-এর কাছে।
মানুষ দাঁড়াবে যন্ত্রের পাশে, চোখে থাকবে অনিশ্চয়তার ছায়া—আমার স্থান কোথায়?”

তবু, কেবল ভয়ের ছায়ায় ঢেকে রাখা যাবে না সবটুকু চিত্র।
Harvard Business Review বলছে—মানুষ এখন এআই-এর সঙ্গে কথা বলছে, নিজের কষ্ট ভাগ করছে।
ঠিক যেমন কেউ ডায়েরির পাতায় ফেলে রাখে নিজের না-বলা কথা।

Council of Europe শপথ নিচ্ছে—
প্রযুক্তি যেন মানবাধিকারের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে না পারে।
নতুন নীতিমালা তৈরি হচ্ছে, নৈতিকতার আলোয়।

তবু প্রশ্ন রয়েই যায়—
এই নীতিমালা কি সত্যিই আটকাতে পারবে সেই যন্ত্রকে, যে কবিতা লেখে, কথা বোঝে, হাসতে শেখে?
আমরা কি নিজের তৈরি বুদ্ধিমত্তার ভেতরেই হারিয়ে যাচ্ছি?

নাকি এই যন্ত্রকে সহচর করে গড়ে তুলতে পারি নতুন এক ভবিষ্যৎ?
একজন বালক ফুটপাথে দাঁড়িয়ে গুগলে টাইপ করছে—
“AI কি মানুষ হবে একদিন?”
হয়তো তার আঙুলের ছোঁয়ায় গড়ে উঠবে আগামী দিনের সত্যি।

সূর্য তখনও ওঠেনি,
তবু এক অদৃশ্য আলো ছড়িয়ে পড়েছে চারদিকে—
এটা যন্ত্রের নয়, মানুষের মনের—
যেখানে প্রশ্ন জন্মায়, সেখানেই শুরু হয় উত্তর খোঁজার পথচলা।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *